দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহের সঙ্গে তর্ক এবং অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ৬ মাস নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। শাস্তির মেয়াদ পুনর্বিবেচনা করতে গত ২০ জুলাই বিসিবিকে চিঠি দিয়েছিলেন সাকিব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের আবেদনে গত মঙ্গলবার জরুরি সভায় বসেছিল বিসিবির পরিচালনা পর্ষদ। সভায় বাঁ হাতি অলরাউন্ডারের শাস্তির মেয়াদ কমিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বরে আনেন পরিচালকরা। সভার ফাঁকে মিডিয়ার মুখোমুখিতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন, মেয়াদ কমানোয় জিম্বাবুয়ে সিরিজ, এশিয়ান গেমস ও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে পারবেন সাকিব। তবে বিবেচিত হবেন পুলের ক্রিকেটার হিসেবে। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার অনুমতি পেয়েও বেশ কিছু জটিলতায় দ্বিতীয় ধাপে দলবদল করতে পারছেন না সাকিব। ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম) চেয়ারম্যান আ জ ম নাছির জানিয়েছেন, টাইগারদের সাবেক অধিনায়কের দলবদলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে বিসিবি এবং সেটা লিগ শুরুর আগে। উল্লেখ্য, ১০ অক্টোবর প্রিমিয়ার ক্রিকেট শুরুর একটি তারিখ ঠিক করে রেখেছে সিসিডিএম। এদিকে চার দশকের স্মৃতিবিজড়িত সিসিডিএমের অফিসকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে গুলশান নাভানা ভবনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। এতে ক্ষুব্ধ ক্লাব কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় ধাপের দলবদলের প্রথমদিন ছিল কাল। কাল ঘর গুছিয়ে নিয়েছে ওল্ড ডিওএইচএস, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, মোহামেডান, ভিক্টোরিয়া, প্রাইম ব্যাংক, শেখ জামাল ধানমন্ডি ও পারটেঙ্। আজ দলবদল করবে আবাহনী, গাজী ট্যাংক, প্রাইম দোলেশ্বর, কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমী ও কলাবাগান ক্রীড়া চক্র।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে ২৩ ক্রিকেটারকে পুলের আওতায় আনে বিসিবি। নিষিদ্ধ থাকায় রাখা হয়নি সাকিবকে। ক্যারিবীয় সফরে যাওয়ার আগে পুলের ক্রিকেটারদের দলবদল করা হয় ১০ ও ১১ আগস্ট। প্রথম ধাপে দলবদল করতে পারেননি জাতীয় দলের দুই স্পিনার আরাফাত সানি ও সোহাগ গাজী। তবে টোকেন তুলেছিলেন দুজনেই। দুজনেই এবার খেলবেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। নিষিদ্ধ থাকায় প্রথম ধাপে দলবদল করতে পারেননি সাকিব। এখন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার অনুমতি মেলায় তার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে অন্য ক্লাবগুলো। কিন্তু সাকিবের বিষয়ে আগ্রহী গাজী ট্যাংক। এই জটিলতা দূর করতে সিসিডিএম চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক আ জ ম নাছির বল বিসিবির কোর্টে ঠেলে দিয়েছেন, 'সাকিবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ারনেই সিসিডিএমের। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে বিসিবি।
বিসিবি সভাপতি সিদ্ধান্ত নিবেন সাকিব কোন প্রক্রিয়ায় দলবদল করতে পারবেন।' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড পরিচালক জানিয়েছেন, 'সাকিবকে সেই ক্লাবই নিতে পারবে, যারা পুলের কোনো ক্রিকেটারকে দলভুক্ত করতে পারেনি।' পুলের ক্রিকেটার নিতে পারেনি ওল্ড ডিওএইচএস, পারটেঙ্, ব্রাদার্স ইউনিয়ন। লটারির মাধ্যমে ভাগ্য নির্ধারিত হবে সাকিবের। অবশ্য আর্থিকভাবে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সাকিব, তাই বিসিবি ৪০ লাখ টাকা বেস প্রাইজ ঠিক করে দিয়েছে।
কাল সবার আগে দলবদলে আসে ব্রাদার্স। দলের দুই উল্লেখযোগ্য ক্রিকেটার আফতাব আহমেদ ও নাজিমুদ্দিন। আফতাব গত মৌসুমে খেলেছেন চ্যাম্পিয়ন গাজী ট্যাংকে। এ মৌসুমই তার কারিয়ারের শেষ বলে জানিয়েছেন আফতাব, 'এ মৌসুমের পর আমি আর ক্রিকেট খেলব না। আমি কোচিংয়ে মনোনিবেশ করতে চাই। আমার নিজের একটি ক্রিকেট একাডেমি রয়েছে।' নাজিমুদ্দিন বলেন, 'ব্রাদার্সে খেলতে বলেছেন নাছির ভাই। তাই খেলছি।' পুলের ক্রিকেটার হওয়ার পরও প্রথম ধাপে দল পাননি আরাফাত সানি। তবে টোকেন তুলে জমা দিয়েছেন শেখ জামালে। যদিও এই বাঁ হাতি স্পিনারের বিষয়ে বিশেষ আগ্রহী ছিল গাজী ট্যাংক। কিন্তু কথা দিয়ে ফেলাতে খেলছেন শেখ জামালে, 'প্রথম ধাপে দলবদল না করতে পেরে মন খারাপ হয়েছিল। একবার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলাম লিগ না খেলার। কিন্তু এটা আমার জন্য ভালো হবে না ভেবেই দলবদল করলাম।' শেখ জামালে নাম লেখান জাতীয় দলের এক সময়কার বাঁ হাতি ওপেনার শাহরিয়ার নাফিস।
আজ দলবদলের শেষ দিন। এদিন অনেকেই দলবদল করবেন। কিন্তু দুই দল থেকে টাকা নেওয়ায় নুরুল আহসান সোহান ও মেহরাব জুনিয়রের দলবদল না করার সম্ভাবনাই বেশি।