নয় বছর আগে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে খেলেছিলেন শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হয়ে। এরপর বগুড়ায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট। সেখানেও পরিচয় ছিল ব্যাটসম্যান। কলম্বোয় ক্যারিয়ারের তিন নম্বর টেস্টে নিজের পরিচয়ে খেলতে নামেন মুশফিকুর রহিম। অভিষেক হয় উইকেটরক্ষক মুশফিকের। উইকেটের পিছনে গ্লাভস হাতে দাঁড়ালেও প্রথম দুই টেস্টে কোনো ক্যাচ কিংবা স্ট্যাম্পিং করেননি। উইকেটরক্ষক হিসেবে প্রথম ক্যাচ অভিষেক টেস্ট খেলার প্রায় তিন বছর পর, ডুনেডিনে। কলম্বোয় সেই যে পথচলা শুরু উইকেটরক্ষক মুশফিকের, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সেন্ট লুসিয়া টেস্ট পর্যন্ত তা করে গেছেন একাগ্রচিত্তে। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে যে সিরিজ খেলবে টাইগাররা, তাতে অধিনায়ক কাম উইকেটরক্ষক হিসেবেই দেখার সম্ভাবনা বেশি মুশফিকের। টিম ম্যানেজমেন্টও চাইছেন, কিপিং ছেড়ে যেন নির্ভার হয়ে ব্যাটিং করেন দেশসেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক। সেক্ষেত্রে নুরুল হাসান সোহানকে দেখা যেতে পারে গ্লাভস হাতে উইকেটের পেছনে।
ক্যারিয়ারে ৪০টি টেস্ট খেলে মুশফিক রান করেছেন ৩৩.৬০ গড়ে ২৩৫২। উইকেটরক্ষক হিসেবে ক্যাচ নিয়েছেন ৬৩টি এবং স্ট্যাম্পিং করেছেন ১০টি। অধিনায়ক হিসেবে দলের দায়িত্ব নেন ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে। অধিনায়ক মুশফিক রান করেন ১১৫৭। একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিটিও অধিনায়ক হয়ে। আলোচনায় উঠে আসলেও দেশসেরা ব্যাটসম্যান যে অধিনায়ক হিসেবে ভালো, রেকর্ডস তাই বলে। তবে নির্বাচক মণ্ডলী, টিম ম্যানেজমেন্ট আরও দায়িত্বশীল ব্যাটিং চান অধিনায়কের কাছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড পরিচালক বলেন, 'সারা দিন উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে কিপিং করার পর ব্যাটিং করা কষ্টকর। এছাড়া মাঠে থেকে দল পরিচালনাও করতে হয়। সুতরাং তার কাজটা অনেক কঠিন। ব্যাটিংয়ে সে যেন আরও মনোযোগ দিতে পারেন, সেজন্যই এ রকমটা ভাবা হচ্ছে।' ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে মুশফিক একটি সেঞ্চুরিসহ(১১৬) রান করেছেন ১৭৯। উইকেটরক্ষক হিসেবে ফিল্ডিং করেছেন ৪৬১ ওভার। ব্যাটিং করেছেন ৬৬.২ ওভার এবং ক্রিজে ছিলেন ৫৬৮ মিনিট। পরিসংখ্যানই বলছে কতটা ধকল গেছে মুশফিকের উপর দিয়ে। অবশ্য কিপিংয়ের দায়িত্ব থেকে নিষ্কৃৃতি দেওয়া কিংবা টেস্ট ও ওয়ানডেতে আলাদা অধিনায়ক প্রসঙ্গে কোনো কথাই বলতে রাজি হননি প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। শুধু বলেন, 'মুশফিক আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান। আমরা চাইব দলের জন্য আরও সেরাটা খেলুক। শুধু তিনি নন, পুরো দলই যেন সেরাটা খেলতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখাই আমাদের কাজ।'