লক্ষ্য পূরণ হবে কী শেখ রাসেলের। আজ কলম্বোতে তারা জয় পেলে বাংলাদেশের প্রথম দল হিসেবে এএফসি প্রেসিডেন্ট কাপ ফুটবলে ফাইনালে খেলবে। এই আসরে দেশের জনপ্রিয় দল ঢাকা আবাহনী বেশ ক'বার অংশগ্রহণ করলেও কখনো চূড়ান্ত পর্বে খেলতে পারেনি। শেখ রাসেলই এমন একটি দল প্রথমবার খেলতে গিয়ে এ কৃতিত্ব অর্জন করেছে। অর্থাৎ দেশের ফুটবলে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে তারা। কিন্তু এতেই সন্তুষ্ট থাকতে চায় না শেখ রাসেল। লক্ষ্য তাদের ফাইনাল খেলা। ঢাকা ছাড়ার আগে দলের কোচ জাকারিয়া বাবু ও অধিনায়ক মিঠুন বলে যান ফাইনাল খেলার লক্ষ্য নিয়েই আমরা কলম্বো যাচ্ছি। প্রথম ম্যাচে মঙ্গোলিয়ার এরচিম ক্লাবকে ১-০ গোলে হারিয়ে সে রাস্তা তৈরিও করে রেখেছে। আজ জিতলেই লক্ষ্য পূরণ হয়ে যাবে। তবে কাজটি কঠিনই বলা যায়। কেননা প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে নামবে উত্তর কোরিয়ার রিমস্থ ক্লাব। যারা প্রথম ম্যাচে এরচিমকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে। ফাইনাল খেলতে তাদের আজ ড্র করলেই চলবে। শেখ রাসেল জিততে না পারলে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেবে। এশিয়ান গেমসেও বাংলাদেশের অবস্থা একই ছিল। প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে মামুনুলদের হংকংকে হারাতেই হতো। ড্র করলেই বিদায়। শেষ পর্যন্ত ভালো খেলেই ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ বিদায় নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট কাপেও কি শেখ রাসেলের একই পরিণতি হবে? 'শক্তির বিচারে অবশ্যই রিমস্থ এগিয়ে। জিততে হলে মিঠুন, এমিলিদের অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে হবে। গতকালও হাল্কা অনুশীলন করেন দলের খেলোয়াড়রা। কোচ জাকারিয়া বাবু বলেন, প্রতিপক্ষ অবশ্যই শক্তিশালী। আমরা সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে মাঠে নামব। আশা করি ছেলেরা হতাশ করবে না। অধিনায়ক মিঠুন বললেন, আমরা জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব। বাঁচা-মরার লড়াই সুতরাং জেতার জন্য সবাইকে সেরা নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে হবে। উল্লেখ্য, গত মে মাসে এই কলম্বোতে বাছাই পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেখ রাসেল ফাইনাল রাউন্ডে ঠাঁই পেয়েছে। আশি ও নব্বই দশকে এশিয়ান ক্লাব ফুটবলে ঢাকা মোহামেডান দু'বার চূড়ান্ত পর্বে উঠেছিল। ইরানের পিরুজী ও কাতার চ্যাম্পিয়ন আনসাদকে হারানোর কৃতিত্বও ছিল। কিন্তু বর্তমানে ফুটবলে যে সংকটাপন্ন অবস্থা তাতে শেখ রাসেলের চূড়ান্ত পর্বে ঠাঁই পাওয়াটা বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আর এই মুহূর্তে ফাইনালে গেলে ইতিহাসই হয়ে যাবে। সন্দেহ নেই, এশিয়ান গেমসে হতাশার পর ফুটবলপ্রেমীরা আজ চেয়ে থাকবে কলম্বোর দিকে। মিঠুনরা লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে ফুটবলে কিছুটা হলেও স্বস্তি নেমে আসবে। শেখ জামাল আইএফএ শিল্ডে ফাইনাল খেললেও শিরোপা জিততে পারেনি। শেখ রাসেল ফাইনালে উঠে শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। দলটি এমন অবস্থায় টুর্নামেন্টে খেলতে গেছে যখন দেশে ঘরোয়া আসরে মোটেই সুবিধা করতে পারছিল না। গত মৌসুমে তিন ট্রফি জিতলেও এবার ফেডারেশন কাপ, স্বাধীনতা কাপ ও লিগেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বাকি আছে সুপার কাপ এখানেও ব্যর্থ হলে কোনো যায় আসবে না যদি আজকের ম্যাচে জিতে যায়। দলের শক্তি বৃদ্ধি করতে তারা মোহামেডান থেকে এমিলি, ইমন, নাহিদ, মামুন, আবাহনী থেকে ওয়ালি ফয়সাল, শাহেদ ও ব্রাদার্সের মেজবাহকে নিয়ে গেছে। তারকা খেলোয়াড়ের অভাব না থাকলেও প্রতিপক্ষ উত্তর কোরিয়ার ক্লাব বলেই যত ভয়। এখন এ ভয়কে জয় করা যাবে কিনা তা রেফারির শেষ বাঁশি বাজানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।