নারী নির্যাতন মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রুবেলের মতো ঘটনা না হলেও ক্রীড়াবিদদের জেলে যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। পাকিস্তান আমলে ১৯৭০ সালে দুদিনের জন্য জেল খেটেছিলেন দিলকুশার খ্যাতনামা মাকরানি ফুটবলার মুসা। কাপ্তানবাজারে এক ব্যবসায়ীর অর্থ আত্দসাতের দায়ে তাকে জেলে পাঠানো হয়। পরে আবার সমঝোতা হয়ে যাওয়াতে দুদিন পরই মুসাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এক যুগ পর অর্থাৎ ১৯৮২ সালে স্বাধীনতার পরে ঘটে যায় ক্রীড়াঙ্গনে বড় ঘটনা। মোহামেডান-আবাহনী ফুটবল ম্যাচে সুপার লিগে গোলের দাবি করে আবাহনী। রেফারি মুনীর হোসেন গোলের বাঁশি না বাজানোতে দলের ফুটবলাররা মাঠ ত্যাগ করেন। এরপরই দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। রাতের বেলায় আবাহনীর খেলোয়াড়দের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মতিঝিল থানায় ডাকা হয়। দলের অন্য খেলোয়াড়কে ছেড়ে দিলেও চার ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু, গোলাম রব্বানী হেলাল ও কাজী আনোয়ারকে ভোরের বেলায় গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। যশোর ও রাজশাহী কারাগারে চার ফুটবলারকে রাখা হয়। ফুটবল মাঠে হট্টগোল তখন স্বাভাবিক ঘটনাই ছিল। ১৯৮২ সালে যে পরিণতি হয়েছিল এর চেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আগেও হয়েছে। কিন্তু কখনো কোনো খেলোয়াড়কে গ্রেফতার বা জেলে পাঠানো হয়নি। এ জন্য চার ফুটবলারকে কোনো কারণ ছাড়াই জেলে নেওয়াতে দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। এই ক্ষোভ সামাল দিতে না পারায় তৎকালীন সরকার ১৭ দিনের মধ্যে চার ফুটবলারকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। অথচ কি কারণে তারা জেল খাটলো তার রহস্য আজও উন্মোচন হয়নি। জাতীয় দলের সঙ্গে ইতালিতে খেলতে গিয়ে নব্বই দশকে এক হকি খেলোয়াড় দেশে না ফিরে ইতালিতে আত্দগোপন করেছিলেন। পরে সে ইতালিতে জেল খেটে দেশে ফিরে আসেন। যদিও এ ঘটনার কথা হকি ফেডারেশন কখনো স্বীকার করেনি। খেলোয়াড়রাই এ তথ্য সাংবাদিকদের দিয়েছিলেন। দেশ নন্দিত শুটার আসিফের বিরুদ্ধে মামলা হলেও কখনো তাকে জেলে পাঠানো হয়নি। এ মামলা নিয়েও ক্রীড়াঙ্গনে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। চার ফুটবলারের জেল খাটা নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনের সহানুভূতি সৃষ্টি হলেও ক্রিকেটার রুবেলের ব্যাপারটি পুরোপুরি ভিন্ন। যে কাণ্ড তিনি ঘটিয়েছেন এ নিয়ে তার সতীর্থরাও লজ্জিত। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তিনি আছেন। এখন খেলতে পারবেন কি এটা নির্ভর করছে তার মুক্তি ও জামিনের ওপর।