হকিতে এখন প্রশান্তির হাওয়া বইছে। মাঝে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে যে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল তা আপাতত কেটে গেছে। চোখে পড়ার মতো সাংগঠনিক তৎপরতা দেখাচ্ছে হকির নির্বাচিত কমিটি। আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশনের সভাপতি লিয়েন্দ্র নেগ্রে তৃতীয়বারের মতো ঢাকা সফরে এসে ফেডারেশনের কর্মকাণ্ডে প্রশংসা করেন গেছেন। বাংলাদেশের হকি মান উন্নয়নে তিনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশনের সহযোগিতায় শাহীন স্কুলে টার্ফ বসানোর কাজ এগিয়ে চলেছে। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে বসানো হচ্ছে নতুন নীল রংয়ের টার্ফ। নেগ্রে চাচ্ছেন ঢাকায় আন্তর্জাতিকমানের মাঠ নির্মাণ করে আন্তর্জাতিক আসরের আয়োজন করুক। হকি ফেডারেশনের টার্গেট রয়েছে চলতি বছরের শেষের দিকে ভারত ও পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের আয়োজন করা। ১৯৯৭ সালে হকি ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় শেষবারের মতো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হয়েছিল। বিশাল আকৃতির স্টেডিয়াম গড়ার পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রতিবছরই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের আয়োজনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৮৫ সালে ঢাকায় একবারই এশিয়া কাপের আয়োজন হয়। তাও আবার তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে সবুজ ঘাসে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলতে আসা অনেক বিদেশিই বলেছেন, হকিতে এত বড় স্টেডিয়াম কম দেশেই আছে। এখানে অনায়াসে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট করা যেতে পারে। ব্যর্থতা বা অপারগতা যে কারণে হোক হকি ফেডারেশন এশিয়ান বাছাই পর্ব ছাড়া বড় কোনো আসরের আয়োজন করতে পারেনি। এক সময় সারা বিশ্বে দিনের আলোয় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হলেও এখন অনুষ্ঠিত হয় ফ্লাড লাইটে। বিস্ময় হলেও সত্যি যে ক্রীড়াঙ্গনে এত অর্থের ছড়াছড়ি হলেও মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে ফ্লাড লাইট লাগানো সম্ভব হয়নি। ৭০ দশকে বঙ্গবন্ধু ও ৮০ দশকে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ফ্লাড লাইট বসানো হয়েছিল জাতীয় ক্রীড়াপরিষদের অর্থায়নে। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে স্টেডিয়াম নির্মাণ হলেও কেন যে সঙ্গে সঙ্গে ফ্লাড লাইট লাগানো হয়নি সেটাই রহস্য। যাক দেরিতে হলেও ফেডারেশন উদ্যোগ নিয়েছে লাইট লাগানোর। কিন্তু উদ্যোগ নিলে কি হবে অর্থ ছাড়া লাইট লাগাবে কীভাবে? বেশ কিছুদিন আগে অর্থ চেয়ে জাতীয় ক্রীড়াপরিষদের কাছে চিঠি দিয়েছে হকি ফেডারেশন। এ ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমত উল্লাহ বলেছেন ক্রীড়াপ্রতিমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন চিঠিকে তারা গুরুত্বসহকারে দেখছেন। এদিকে নেগ্রে বলে গেছেন যদি হকি ফেডারেশন সত্যিকারে ফ্লাড লাইট লাগাতে চায় তাহলে খুব কম মূল্য ব্যবস্থা করে দেবেন। নেগ্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর ফেডারেশন নীরব হয়ে বসে আছে। রহমত উল্লাহ আফসোসের সুরে বলেছেন, সারা বিশ্বে হকি খেলা রাতের বেলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা পারছি না বলে পিছিয়ে যাচ্ছি। নেগ্রে একই কথা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের কাছেও বলেছেন। এখন এই সুযোগটা যদি হাত ছাড়া হয়ে যায় তাহলেতো হকির মানের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। রহমত উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের হকির উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখে নেগ্রে অল্প অর্থে ফ্লাড লাইট লাগানোর কথা বলেছেন। এ অবস্থায় তাকে কিছু না জানালে পিছুটানওতো নিতে পারেন তিনি।