এক সময় ফুটবলের পর সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক খেলা বলে মনে করা হতো হকিকে। কিন্তু বিগত তিন বছর ধরে হিমাগারে পড়ে আছে প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগ। ফলে সেই উত্তেজনা আর নেই। তবে ফের আশা দেখাচ্ছে প্রস্তাবিত ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি লিগ। এটি আবারও হয়ে উঠতে পারে খেলোয়াড়দের উপার্জনের উৎস।
দেশের হকি খেলোয়াড়েরা বারবার প্রিমিয়ার লিগ আয়োজনের আবেদন জানালেও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে কিছু ক্লাবের অনীহায় তা করতে পারেনি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন।
জাতীয় দলের মিডফিল্ডার মোহাম্মদ নাঈম উদ্দিন বলেছেন, “প্রতিটি ক্লাবের কর্মর্কতারা চাইছেন লিগটি চালু হোক। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল তারা বৈঠকে বসলে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীতি পারে না। আর তাই আমাদের বছরের পর বছর না খেয়ে থাকতে হয়।
“ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চালু হওয়া মানে যেসব খেলোয়াড় সবসময় এবং নিয়মিত সুফল পেতে চায় তাদের জন্য এক ধরনের দারুণ সুযোগ। আমরা চাই হকি পিচে ফিরে আসুক এবং প্রতিটি খেলোয়াড় এই খেলাকে উপজীব্য করে জীবিকা নির্বাহ করুক। বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই বেকার, কিছু বাদে যারা বিভিন্ন বাহিনীতে চাকরি করেন,” যোগ করেন তিনি।
ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের প্রবর্তন অবশ্যই খেলোয়াড়দের অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দেবে এবং উদীয়মান খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেবে চালিয়ে যাওয়ার।
তবে, লিগ চালু হওয়াটা নির্ভর করবে টিএ স্পোর্টস বাংলাদেশ হক ফেডারেশনকে যে প্রস্তাবটি দিয়েছে তাতে তারা কীভাবে সাড়া দেয় সেটার ওপর।
টি স্পোর্টসের সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইশতিয়াক সাদেক বলেন, “করপোরেট হাউসগুলোকে বোঝানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ আমাদের লিগের জন্য একটি টেকসই মডেল তৈরি করতে হবে। আমরা মনে করি প্রথম বছরের জন্য চার থেকে পাঁচটি করপোরেট হাউসকে রাজি করাতে পারবো। তবে আমরা যদি টেকসই মডেল নিশ্চিত করতে না করি তাহলে তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে না।”
টি-স্পোর্টসের আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা বিপিএল’র আদলে একটি ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন। এতে ছয় বিভাগের ছয়টি করপোরেট হাউস অংশ নেবে। ডাবল-লেগ পদ্ধতিতে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। শীর্ষ চার দল প্লে-অফে খেলবে। আগামী মে মাসে এই টুর্নামেন্ট মাঠে গড়াতে পারে।
তিনি বলেন, প্রতিটি দলে একজন করে আইকন খেলোয়াড় থাকবে, যিনি সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাবেন। এছাড়া এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে খেলোয়াড়দের। সেই সঙ্গে দলে একজন বিদেশি খেলোয়াড় নেওয়ারও সুযোগ থাকবে।
টি স্পোর্টসের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, হকির প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে বিপণনে বেশি অর্থ ব্যয় করবে টি স্পোর্টস। খেলোয়াড়েরা হয়তো বড় পারিশ্রমিক পাবেন না। তবে তারা পরবর্তী টুর্নামেন্ট থেকে ভাল অর্থই পাবে। আয়ের নির্দিষ্ট একটি অংশ আমরা হকি ফেডারেশনকেও দিতে চাই। আমরা হকিকে একটি ব্রান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
হকি ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আমরা টি স্পোর্টসের প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছি। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই ওই কমিটি বিষয়টি চূড়ান্ত করবে।
ইশতিয়াক সাদেক বলেন, আমি জানি না কয়টি ফ্রাঞ্চাইজি হকিতে অবদান রাখবে। তবে আমি বলতে পারি মানুষ আবারও হকির প্রতি আগ্রহী হবে, যদি আমরা যা চাচ্ছি সে অনুযায়ী লিগ চালু করতে পারি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম