দক্ষিণ আফ্রিকা দারুণ লড়াই করলেও শেষরক্ষা করতে পারল না। ফখর জামানের টানা দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি ও বাবর আজমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বোলারদের মিলিত চেষ্টায় সিরিজ জিতে নিল পাকিস্তান। সেঞ্চুরিয়নে গতকাল বুধবার (৭ এপ্রিল) সুপারস্পোর্ট পার্কে প্রথমে ব্যাট করা পাকিস্তান নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২০ রান করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২৯২ রানে অল আউট হয় প্রোটিয়ারা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিল পাকিস্তান।
টস হেরে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে দুই পাকিস্তানি ওপেনার। ২১.২ ওভারে ১১২ রান করেন ইমাম-উল-হক ও ফখর জামান জুটি। ইমাম ব্যক্তিগত ৫৭ করে বিদায় নেন। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অধিনায়ক বাবর আজমের সঙ্গে আরও ৯৪ রান করে তুলে নেন ওয়ানডের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। পরে ১০৪ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকিয়ে ১০১ করে কেশভ মাহারাজের বলে আউট হন। এই সিরিজে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করলেন বাঁহাতি ফখর। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ১৯৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন।
পাকিস্তানের ইনিংসে মাঝে ছন্দপতন হলেও হাল ধরেন বাবর। সপ্তম উইকেট জুটিতে তিনি হাসান আলীর সঙ্গে ২৩ বলে ৬৩ রানের ঝড়ো পার্টনারশিপ গড়েন। তার সামনে শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সুযোগ ছিল সেঞ্চুরি করার। তবে তুলে মারলেও ৮২ বলে ৯৪ রানের শেষ হয় তার ইনিংস। এসময় তিনি ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন। আর হাসান মাত্র ১১ বলে একটি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকা বোলারদের মধ্যে স্পিনার কেশভ মাহারাজ সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান। এছাড়া এইডেন মার্করাম ২টি উইকেট তুলে নেন।
লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরুটা বড় করতে পারেননি এইডেন মারক্রাম। স্মাটস টিকেননি বেশিক্ষণ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তাকে বোল্ড করে ওয়ানডে অভিষেকে উইকেটের স্বাদ পান লেগ স্পিনার উসমান। এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করতে থাকেন ইয়ানেমান মালান। টেম্বা বাভুমাকে নিয়ে ধরেন দলের হাল। কিন্তু এক ওভারেই এই দুই জনকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের চাপে ফেলে দেন নওয়াজ। ৯ চারে ৭০ রান মালানকে এলবিডব্লিউ করার পর বাঁহাতি স্পিনার বোল্ড করে দেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ককে। হাইনরিখ ক্লাসেনকেও দ্রুত সাজঘরে ফেরত পাঠান নওয়াজ। ১৪০ রান ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলকে টানেন ভেরেইন ও ফেলুকওয়ায়ো। তাদের শতরানের জুটিতে লড়াইয়ে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকা।
কিন্তু ফিফটির পর ফিরে যান দুই জনই। ৪০ বলে পঞ্চাশ করে ভেরেইন দ্রুত রান বাড়ানোর চেষ্টায় বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন তিনটি করে ছক্কা-চারে ৬২ রান করে। পরের ওভারেই ফিরে যান ৫৪ রান করা ফেলুকওয়ায়ো। এরপর আর পেরে উঠেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তান স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ ও শাহীন শাহ আফ্রিদি সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান। এছাড়া হারিস রউফ দুটি উইকেট তুলে নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩২০/৭ (ইমাম ৫৭, ফখর ১০১, বাবর ৯৪, রিজওয়ান ২, সরফরাজ ১৩, ফাহিম ১, নওয়াজ ৪, হাসান ৩২; মারক্রাম ১০-০-৪৮-২, হেনড্রিকস ৭-০-৩৮-০, সিপামলা ৬-০-৫০-০, ডুপাভিলন ৫-০-৩০-০, ফেলুকওয়ায়ো ৪-০-৩৭-১, মহারাজ ১০-১-৪৫-৩, স্মাটস ৮-০-৬৭-১)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৯.৩ ওভারে ২৯২ (মালান ৭০, মারক্রাম ১৮, স্মাটস ১৭, বাভুমা ২০, ভেরেইন ৬২, ক্লাসেন ৪, ফেলুকওয়ায়ো ৫৪, মহারাজ ৫, হেনড্রিকস ১, সিপামলা ৪*, ডুপাভিলন ১৭; আফ্রিদি ৯.৩-০-৫৮-৩, হাসান ১০-০-৭৬-১, রউফ ৯-১-৪৫-২, উসমান ৯-০-৪৮-১, নওয়াজ ৭-০-৩৪-৩, ফাহিম ৫-০-৩০-০)।
ফল: পাকিস্তান ২৮ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে পাকিস্তান।
ম্যান অব দা ম্যাচ: বাবর আজম।
ম্যান অব দা সিরিজ: ফখর জামান।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ