সফরকারী ভারতের বিপক্ষে পর পর দুই টেস্টে ম্যাচের সেরা হয়েছেন বেন স্টোকস। লর্ডসে ম্যাচের সেরা হয়ে তিনি যতটা আনন্দ পেয়েছিলেন, ম্যানচেস্টারে ততটাই হতাশ হয়েছেন। কারণ একটাই। ম্যাচ জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। অনেক চেষ্টা করেও ভারতকে হারাতে পারেনি তারা। তাই মন খারাপ স্টোকসের। এই পুরস্কারের কোনো মূল্যই তাঁর কাছে নেই।
ভারতের প্রথম ইনিংসে বল হাতে ৫ উইকেট ও পরে ব্যাট হাতে শতরানের জন্য ম্যাচের সেরা হয়েছেন স্টোকস। সেই পুরস্কার নিতে গিয়ে তিনি বলেন, “একজন অলরাউন্ডারের কাছে আসল গুরুত্ব পায় খেলার ফল। যদি জিততে পারতাম, তা হলে এই পুরস্কারের গুরুত্ব ছিল। জিততে পারিনি। এর কোনো দাম নেই। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভারতকে হারাতে পারিনি।”
ভারতের থেকে প্রথম ইনিংসে ৩১১ রানে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড। সিরিজে হারের শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৩ ওভার ব্যাট করেছে ভারত। ইংল্যান্ড মাত্র ৪ উইকেট তুলতে পেরেছে। ভারতের এই লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন স্টোকস।
তিনি বলেন, “ওয়াশিংটন ও জাদেজা যে ভাবে খেলল তা অসাধারণ। দু’-এক বার মনে হয়েছিল জেতার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভারতের এই দলকে হারানো কঠিন। ওরা সেটা প্রমাণ করেছে। আমরা সব রকম চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওদের হারাতে পারিনি। ওরা পঞ্চম দিনের চাপ সহ্য করেছে।”
পঞ্চম দিন ইংল্যান্ডের জয়ের সুযোগ তৈরি করেছিলেন স্টোকসই। ৯০ রানের মাথায় লোকেশ রাহুলকে আউট করেন তিনি। শুভমন গিলকেও কয়েক বার সমস্যায় ফেলেন স্টোকস। কিন্তু জাদেজা ও ওয়াশিংটনকে পারেননি। তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন ইংলিশ অধিনায়ক।
তিনি বলেন, “ডানহাতি ব্যাটারদের জন্য পিচে অসমান বাউন্স ছিল। সেটা কাজে লাগাচ্ছিলাম। কিন্তু বাঁহাতিদের জন্য সেটা ছিল না। তাই ওদের সমস্যায় ফেলতে পারিনি। উইকেটে তৈরি হওয়া রাফের (জুতোর আঘাত পিচের মাটি খুঁড়ে যাওয়া) সুযোগও নিতে পারিনি। বল পুরনো হয়ে যাওয়ার পর পিচ থেকে তেমন সুবিধাও পাচ্ছিলাম না।”
দুই ইনিংস মিলিয়ে ২৫৭ ওভার বল করেছে ইংল্যান্ড। দলের চার পেসারকে অনেক বল করতে হয়েছে। তাঁরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। সেটা বোলারদের শরীরী ভাষা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। সেই জন্য শেষ দিকে দুই পার্ট টাইম বোলার জো রুট ও হ্যারি ব্রুকের হাতে বল তুলে দেন স্টোকস।
তিনি বলেন, “এই টেস্টে বোলারদের শরীরের উপর প্রচুর ধকল গিয়েছে। তাই শেষ দিকে ঝুঁকি নিতে চাইনি। ডসনও অনেক বল করেছে। আমি চাইনি বোলারদের চোট লাগুক। বোলারেরা শারীরিক ভাবে কোন জায়গায় আছে তা দেখতে হবে। তার পরেই পরের টেস্টের দল ঠিক করব।”
টেস্টে পঞ্চম দিন শেষ এক ঘণ্টায় ১৫ ওভারের খেলা বাকি ছিল। তখনও ক্রিজে জাদেজা ও ওয়াশিংটন। ভারতের লিড তখন ৭৫ রান। স্টোকস বুঝে গিয়েছিলেন, ভারতের বাকি ছয় উইকেট ফেলে আর এই ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়। তাই তিনি ড্রয়ের প্রস্তাব দিতে যান। কিন্তু তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ভারতের দুই ব্যাটার। ইংলিশ অধিনায়কের এই প্রস্তাবের সমালোচনা হয়েছে। যদিও ম্যাচ শেষে এই বিষয়ে স্টোকসকে কোনো প্রশ্না করা হয়নি। তিনিও আর কথা বাড়াতে চাননি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত