আইটি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বোস্টন কনসালন্টিং গ্রুপের (বিসিজি) সহযোগিতায় স্ট্রাটেজিক সিইও আউটরিচ প্রোগ্রাম চালু করতে যাচ্ছে।
আগামী সোমবার (৩১ জুলাই) স্থানীয় একটি হোটেলে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আইসিটি বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ কর্মসূচির আওতায় আগামী দু’বছর দেশের আইটি প্রতিষ্ঠান ও এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে (সিইও) বিদেশের আইটি প্রতিষ্ঠান ও সিইওদের যোগাযোগ, সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন ঘটিয়ে আইসিটি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করবে বিসিজি। স্ট্রাটেজিক সিইও আউটরিচ প্রোগ্রামের আওতায় বিসিজির গৃহীত কার্যক্রমের বাস্তবায়নের ফলে দু’বছর শেষে অন্তত ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হবে এবং এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিক-নির্দেশনায় আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তোলাসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হওয়ায় দেশে আইসিটি খাতে বিনিয়োগের অনুকুল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি রপ্তানি ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে ও আইসিটি খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বিসিজিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
পলক বলেন, ইতোমধ্যে যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে, রাজশাহী ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইটি পার্ক নির্মিত হচ্ছে। এসব আইটি পার্কে দেশীয় বিনিয়োগের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের আইটি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বিসিজিকে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। বিসিজি সিইও আউটরিচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সে লক্ষ্য পূরণে কাজ করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্প গত জুনে দেশের আইটি/আইটিইএস খাতের উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিসিজিকে নিয়োগ দেয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী বলেন, স্ট্রাটেজিক সিইও আউটরিচ প্রোগামের আওতায় বিসিজির গৃহীত উদ্যোগের বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিদেশের আইটি প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ, সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন ঘটাবে। তারা (বিসিজি) বিদেশি বিনিয়োগকারিদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে আইটি/আইটিইএস খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ কৌশল প্রণয়ন করবে।
এলআইসিটি প্রকল্পের কম্পোনেন্ট টিম লিডার সামি আহমেদ বলেন, সিইও আউটরিচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আইটি/আইটিইএস খাতের উন্নয়নে একটি সমন্বিত কার্যক্রম চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিসিজি বাংলাদেশ এবং বিদেশি আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ও সম্পর্ক তৈরি এবং একে অপরের মধ্যে ব্যবসায়িক উন্নয়নে একটি দীর্ঘ মেয়াদী কর্মসূচি প্রণয়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আইটি/আইটিইএস খাতসংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণে বিসিসি কর্তৃক বাছাইকৃত শীর্ষ ৫ থেকে ৭টি আইটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি পাইলট আউটরিচ প্রোগ্রাম চালু করা হবে।
এলআইসিটি প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, বিসিজির মাধ্যমে দেশের আইটি/আইটিএস খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ব্যাপারে বিনিয়োগ আকর্ষন কৌশল প্রণয়ন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/২৯ জুলাই ২০১৭/এনায়েত করিম