সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আইটি খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো

প্রযুক্তির জয়গান চলছে বিশ্বজুড়েই। জীবন সহজ করতে নিত্যনতুন প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছে টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলো। বিশ্বব্যাপী এখন শীর্ষে রয়েছে প্রযুক্তি ব্র্যান্ডগুলোই। এরাই বিশ্বে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। নতুন নতুন বাজার তৈরি করে ব্যবসায়িক দিক থেকেও সফলতা পেয়েছে। বিশ্বের সেরা প্রযুক্তি ব্র্যান্ডগুলো নিয়েই আজকের আয়োজন

আইটি খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো

সেরা ব্র্যান্ড হিসেবেই বিশ্বে পরিচিত মাইক্রোসফট

৪৫৬ বিলিয়ন ডলার

মাইক্রোসফটের সম্পদের পরিমাণ ৪৫৬ বিলিয়ন ডলার প্রায়। বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটি নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। ১৯৭৫ সালের ৪ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ প্রতিষ্ঠানটি মূলত কম্পিউটার ও প্রযুক্তি ডিভাইসের সফটওয়্যার তৈরি করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্যের রেডমন্ড শহরে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়। সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যারের মধ্যে রয়েছে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এবং মাইক্রোসফট অফিস। ডেভেলপারদের জন্য মাইক্রোসফট ভিজুয়াল স্টুডিও এবং মাইক্রোসফট এসকিউএল সার্ভার বেশ জনপ্রিয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রত্যেকটি সফটওয়্যারই ডেস্কটপ কম্পিউটার বাজারে প্রায় সর্বব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে। এ ছাড়াও মাইক্রোসফট এমএসএনবিসি ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক, এমএসএন ইন্টারনেট পোর্টালের মালিক।

 

ইয়াহুকে বলা হয় ইন্টারনেট শিল্পের অগ্রদূত

৫ বিলিয়ন ডলার

একটা সময়  যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইয়াহু ছিল ইন্টারনেট শিল্পের অগ্রদূত। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে ইয়াহু তার জৌলুস হারিয়েছে। তবুও প্রতিষ্ঠানটির মোট সম্পদের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার। এখন নতুন করে আবার প্রতিষ্ঠানটি আলোচনায় এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানিভেল শহরে এর প্রধান কার্যালয়। ডেভিড ফিলো ও জেরি ইয়াং ইয়াহুর প্রতিষ্ঠাতা। ইয়াহুর রয়েছে ওয়েবসাইট, সার্চ ইঞ্জিন, ইয়াহু ডিকশনারি, ইয়াহু মেইল, ইয়াহু নিউজ, ইয়াহু গ্রুপ, ইয়াহু অ্যানসার, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট, অনলাইন ম্যাপ, ইয়াহু ভিডিও, সোশ্যাল মিডিয়া সেবাসহ নানা রকম ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা। ইয়াহু বিশ্বের অন্যতম সেরা ওয়েবসাইট। ১৯৯৪ সালের জানুয়ারি মাসে ইয়াহু চালু হলেও ইন-করপোরেটেড হয় ১৯৯৫ সালের ১ মার্চ।

 

ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠান টেসলা

বৈদ্যুতিক গাড়ি ইলেকট্র্রনিক পণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান টেসলা। ইলন মাস্কের কোম্পানিটি প্রথমবারের মতো লাভজনক হয়ে ওঠে। আর তাতেই সেটি ট্রিলিয়ন ডলারের (১০০০ বিলিয়ন) প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ফার্ম হার্টজের কাছে ১ লাখ গাড়ি বিক্রির চুক্তি করার পর টেসলার  শেয়ার বেড়েছে ১২.৬ শতাংশ। তাতেই এর বাজারমূল্য ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। একদিক থেকে অবশ্য এই মাইলফলকে পৌঁছানো প্রথম গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এখন  টেসলা। এত দিন এই তালিকায় ছিল অ্যাপল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন এবং গুগলের মালিক অ্যালফাবেট। যারা ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করেন। টেসলার বাজারমূল্য এখন ভক্সওয়াগন এবং টয়োটার মতো কোম্পানিসহ বিশ্বের ৯টি বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতার সম্মিলিত বাজারমূল্যের সমান। তবুও টেসলার বার্ষিক উৎপাদনের হার অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে  বেশ কম। ২০২০ সালে প্রায় ৫ লাখ গাড়ি তৈরি করে টেসলা। এ সংখ্যাটি গাড়ি প্রস্তুতকারক অন্য কোম্পানিগুলোর তুলনায়  বেশ কম। ভক্সওয়াগন ৯.৩ মিলিয়ন, টয়োটা ৭.২ মিলিয়ন এবং রেনল্ট-নিসান-মিৎসুবিশি অ্যালায়েন্স ৬.৮ মিলিয়ন গাড়ি  তৈরি করে। তবে এ অবস্থা পরিবর্তনের জন্য বার্ষিক বিক্রয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করেছেন ইলন মাস্ক। এ ছাড়া বছরে ২০ মিলিয়ন গাড়ি তৈরির আশা করছেন তিনি। এদিকে টেসলা তাদের অটোপাইলটের সর্বশেষ আপডেটটি প্রত্যাহার করে। ৭ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন যানবাহনে রয়েছে এই সফটওয়্যার। ‘সম্পূর্ণ স্বয়ংসম্পন্নভাবে-ড্রাইভিং’ এর এই সফটওয়্যারটি নিয়ে অনেক ড্রাইভারই অভিযোগ করেন। এটি পুনরায় কখন প্রকাশ করা হবে তা জানায়নি টেসলা। এটি নিয়ে গবেষণার কাজ চলছে। গত বছর আগস্টে অটোপাইলট সিস্টেমে একটি আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা তদন্ত শুরু করে ইউএস ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেইফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। অন্যদিকে টেসলা ফোন অর্থাৎ পাইফোন নিয়েও মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

বলা হচ্ছে ফোনের জগৎ আমূল পরিবর্তন করবে পাইফোন।

 

নব্বইয়ের দশক থেকে ইনটেলের কম্পিউটার জগৎ

আমেরিকান বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানি ইনটেল প্রযুক্তি খাতের আরেক জায়ান্ট। এর সম্পদের পরিমাণ ২২৩ বিলিয়ন ডলার। এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেমিকন্ডাক্টর চিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। এটি মাইক্রো প্রসেসরের এক্স৮৬ সিরিজের আবিষ্কারক; যা বেশির ভাগ ডেস্কটপ কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। ইনটেল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৬৮ সালের ১৮ জুলাই। কম্পিউটার প্রসেসর তৈরির পাশাপাশি মাদারবোর্ড, চিপসেট, নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কন্ট্রোলার, ইন্ট্রিগ্রেটেড সার্কিট, ফ্ল্যাস মেমোরি, গ্রাফিক্স কার্ড ইত্যাদি প্রস্তুত করে কোম্পানিটি। ইনটেল ছিল প্রথম দিকের স্ট্যাটিক র‌্যাম এবং ডায়নামিক র‌্যামের স্মৃতির উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান। এটাই তাদের ব্যবসাকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত পরিচিতির মাধ্যম ছিল। প্রতিষ্ঠানটি প্রথম বাণিজ্যিক মাইক্রো প্রসেসর চিপ বানায় ১৯৭১ সালে। প্রতিষ্ঠানটি নব্বইয়ের দশকে কম্পিউটার শিল্পের চাহিদা পূরণ করে সাফল্যের সঙ্গে।

সর্বশেষ খবর