চট্টগ্রাম নগরের অধিকাংশ সড়কই এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মূল সড়ক থেকে শুরু করে গলিপথ, আবাসিক এলাকার সড়ক ভেঙে গেছে। এসব সড়কে জমে থাকছে পানি। ফলে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল দায় হয়ে উঠেছে।
চলতি মৌসুমে কয়েক দফার টানা বর্ষণের পর সড়কের করুণ চিত্র তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) রুটিন কাজের অংশ হিসেবে সড়ক-মহাসড়ক মেরামত-সংস্কারের কাজ করলেও তা ছিল অপ্রতুল। ফলে নিত্য ঝুঁকি নিয়েই সড়কে চলতে হচ্ছে। গত সোমবার সড়ক সংস্কার নিয়ে চসিকের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র। সভায় মেয়র চসিকের পুরকৌশল উপবিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছে তাদের নিজস্ব জোনের অবকাঠামোগত সমস্যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম ডেভেলপমেন্ট ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, প্রতি বছর বর্ষার সময় সড়ক, মহাসড়কগুলো ক্ষতবিক্ষত হয়। নিয়মিতই এসব সড়কের সংস্কার কাজ করা হয়। কাজগুলো করা হয় নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে। নগরবাসীর করের টাকা গচ্চা দেওয়ারও তো একটা মাত্রা থাকা উচিত।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংস্কার কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সড়ক সংস্কার কাজে গাফিলতি বরদাশত করা হবে না। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত এবং মানসম্মত কাজ নিশ্চিত করতে হবে। যেসব ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করছেন না, তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হবে। তিনি আরও বলেন, সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারে ব্যবহৃত বিটুমিনসহ সব নির্মাণসামগ্রীর গুণগত মান নিশ্চিতে প্রয়োজনে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হবে। কোনো ঠিকাদার চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কাজের মান বজায় রাখতে সিটি কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার আপস করবে না।’
জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ড রোড। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির অবস্থা বেহাল। এ সড়কের পাশ দিয়েই বয়ে চলছে কর্ণফুলী নদী। এ নদীতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় ২২টি ঘাট আছে। অথচ সড়কটির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। নগরের বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া চাঁন মিয়া সওদাগর সড়ক দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চলাচল অনুপযোগী। মুরাদপুর-হাটহাজারী সড়কটির প্রায় সবখানে খানাখন্দে ভরা। বেহাল অবস্থা বিবিরহাট, হামজারবাগ, আতুরার ডিপো, রৌফাবাদ, আমিন জুটমিল ও অক্সিজেন মোড়। এ সড়ক দিয়েই বন্দরনগরী থেকে উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, ফটিকছড়ি এবং খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার মানুষজন যাতায়াত করেন।