চট্টগ্রাম নগরের অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা। তবে এ জলাবদ্ধতা কমাতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবার আইন প্রয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে। চসিক এবার জলাবদ্ধতা কমাতে অভিযান পরিচালনা করবে। শিগগিরই এ অভিযান শুরু হবে।
জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে চসিক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সভা-সেমিনার, প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ, যত্রতত্র ময়লা ফেললে জেল-জরিমানার ভয় দেখিয়েছে। কিন্তু এর আশানুরূপ ফল মিলছে না। তাই এবার জলাবদ্ধতা কমাতে যত্রতত্র বর্জ্য ফেললে জেল-জরিমানাসহ কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চসিক।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ যত্রতত্র বর্জ্য ফেলে নালা ভরাট করা। এ ব্যাপারে নগরবাসীকে সচেতন-সতর্ক করতে দীর্ঘদিন ধরে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজ তেমন একটা হচ্ছে না। তাই কঠোর হতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন-খাল দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখতে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রতিটি অভিযানের ফলাফল লিখিতভাবে জমা দিতে হবে। কোন কর্মকর্তা কোথায় কী করেছেন, তা স্পষ্টভাবে নথিভুক্ত থাকবে। আশা করি, জলাবদ্ধতা নিরসনে এ সিদ্ধান্তে আশানুরূপ ফল আসবে।
জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনটি সংস্থা প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে সিডিএ ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা প্রকল্পটির মেয়াদ আগামী বছরের জুনে শেষ হবে। প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ। তাছাড়া সিডিএ ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাইখাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ শীর্ষক ২ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের কাজ প্রায় ৮২ শতাংশ শেষ। চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ। চসিক ‘নগরের বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খনন’ শীর্ষক ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১ হাজার ৩৪৩ কোটি ২১ লাখ টাকার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয় ২০২৪ সালের জুন মাসে। কাজ শেষ না হওয়ায় এটির আরও দুই বছর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৮৫ শতাংশ। পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতি ৪৪ শতাংশ। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল। তবে আবারও মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।