সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন করছে সরকার। অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পোষাতে এই প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামে বন্যায় ২৩ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তারমধ্যে, রোপা আমন, আমন বীজতলা, আউশ ধান ও সবজি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক লাখ ৬১ হাজার কৃষক। এতে কৃষি বিভাগের ক্ষতি হয়েছে ৩১৪ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষকদের মাঝে তিন দফায় সহায়তা দেওয়া হবে। প্রথম দফায় ১৯ হাজার ও দ্বিতীয় ধাপে ৪৭ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হবে। চলতি মাসের শেষের দিকে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবদুচ ছোবহান বলেন, বন্যার ক্ষতি পোষাতে চট্টগ্রামে ৬৬ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন শেষ হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রণোদনা তুলে দেওয়া হবে। প্রণোদনার মধ্যে ৮ ধরনের শীতকালীন সবজি বীজ, ২০ কেজি করে সার, কৃষকের নগদ এক হাজার টাকা প্রদান করা হবে। ১৯ হাজার কৃষককে বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি চাষের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হবে।
জানা যায়, প্রথম ধাপে ফটিকছড়িতে ৭ হাজার কৃষক, মিরসরাইয়ে তিন হাজার কৃষক, হাটহাজারীতে দেড় হাজার কৃষক, পটিয়ায় এক হাজার কৃষক, চন্দনাইশে ১১শ কৃষক, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় ৭শ কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হবে। ১৫ উপজেলার মধ্যে অন্যান্য উপজেলায় ৪শ থেকে ৬শ জন কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপেও ফটিকছড়ি, মিরসরাই, হাটহাজারী, পটিয়া, চন্দনাইশ উপজেলায় বেশি প্রণোদনা দেওয়া হয়। ফটিকছড়িতে ৮ হাজার, মিরসরাইয়ে ৬ হাজার, হাটহাজারীতে চার হাজার, সীতাকুণ্ডে আড়াই হাজার, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় তিন হাজার করে ছয় হাজার, পটিয়ায় চার হাজার, চন্দনাইশে সাড়ে তিন হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হবে। অন্যান্য উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় প্রণোদনা দেওয়া হবে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, বন্যায় রোপা আমন, বীজতলা, আউশ ও সবজি চাষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কৃষির পুনর্বাসনে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। দ্রুত চাষের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে দ্রুত সবজি আবাদের উদ্যোগ নেয়া হয়। ধান ও শাক-সবজিসহ অন্যান্য জমিগুলোতে চাষাবাদ ফিরিয়ে আনতে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার জন্য কাজ চলছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। কৃষি বিভাগ বলছে, বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পুনর্বাসন ছাড়াও ৮ হাজার ৬শ কৃষককে রবিশস্য উৎপাদনে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হবে। এরমধ্যে গম, ভুট্টা, সরিষা, চীনাবাদাম, সূর্যমুখী, পেঁয়াজ, মুগ, খেশারি, ফেলন বীজ রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম