এডিস মশার প্রজননস্থল নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নিয়মিত ও বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে সফলভাবে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রশাসক ড. মুহ. শের আলী। বুধবার সকাল ১১টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জরুরি পরিচালন কেন্দ্র (শীতলক্ষ্যা হল) হতে ‘মশক নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত কার্যক্রম’ সরাসরি তদারকি শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রশাসক ড. মুহ. শের আলী বলেন, ‘এডিস মশার লার্ভা বিনষ্ট এবং জীবন্ত ও উড়ন্ত মশা নিধনের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং করা হচ্ছে এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর যে তালিকা পায়, আমরা সেসব রোগীর ঠিকানা অনুযায়ী বিশেষ মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। সেই বিশেষ কার্যক্রম কিভাবে পরিচালনা করা হয় তা আপনারাও লাইভে প্রত্যক্ষ করেছেন। এ ছাড়াও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম আরো সুন্দর, সুষ্ঠু এবং সুচারুরূপে করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত এবং বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করে চলেছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে এবার সফলভাবে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এ বছরের প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, তাপমাত্রা ৩৫° সেলসিয়াসের বেশি হলে এডিস মশা বেঁচে থাকতে পারে না। এ বছর একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত তাপমাত্রা ৩৫° সেলসিয়াসের ওপরে ছিল। ফলে, তাপমাত্রার কারণে মশার ডেনসিটি অনেকটাই কমে গেছে এবং পরিবেশ-পরিস্থিতি আমাদের জন্য অনেকটাই অনুকূলে ছিল। আমরা আশাবাদী, এ বছর কোনো সমস্যা হবে। কোনো ধরনের সমস্যা হলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে রেসপন্স করব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যতদূর শুনেছি, তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি মহামান্য আদালত সাময়িক স্থগিত করেছে। মহামান্য আদালতের আদেশ প্রতিপালন করতে আমরা সবাই বাধ্য। আমরা এখানো মহামান্য আদালতের আদেশটি পাইনি। আপনারা জানেন, যিনি কনসার্ন ব্যক্তি তিনি মহামান্য আদালতের আদেশটি দ্রুত সংগ্রহ করে তার সাথে রাখেন। আর মহামান্য আদালত থেকে সংশ্লিষ্ট আদেশ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থায় অফিসিয়ালি আসতে একটু সময় লাগে। আমরা দ্রুতই আদেশ পেয়ে যাব। আদেশটি পেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আইনজীবীর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করবে।’
আদালতের আদেশ দাপ্তরিকভাবে আপনাদের কাছে না আসা স্বত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কিভাবে এখনো অফিস করছেন এবং এ ধরনের কার্যক্রমকে পেশিশক্তির ব্যবহার মনে করেন কিনা -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ছাত্র-জনতা অনেক রক্ত দিয়েছে। আপনার-আমার-সবার মাঝে একটি বড় প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। (এই প্রত্যাশা পূরণে) কোনো জায়গায় কোনো অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা থাকলে আমরা নিয়মের মাধ্যমেই সেসব মোকাবেলা করব।’
বক্তব্যের আগে প্রশাসক ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত কার্যক্রম ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূঁঞা, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহতাব আহমেদ, সিস্টেম এনালিস্ট মো. আবু তৈয়ব রোকন, নির্বাহী প্রকৌশলী নূর মোহাম্মদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/শআ