প্রায় ১৪ বছর ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা আবুল হায়দারের স্ত্রীর করার মামলার আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার দিনগত গভীর রাতে নগরীর বাংলা বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার কবির হোসেন খান (৫১) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল খান বাড়ির মৃত আয়নাল আলী খানের ছেলে। নিখোঁজ আবুল হায়দার নগরীর ২১ ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন। সে নগরীর করিম কুটির এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে।
নিখোঁজ বিএনপি নেতার স্ত্রী ও মামলার বাদী রুমানা বেগম বলেন, চাকুরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান ও তার ভাই নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব জড়িত। নগরীর বৈদ্যপাড়া এলাকায় সেনা কর্মকর্তার বাড়ির পাশের জমি পানির দামে কিনতে তার স্বামীকে গুম করে। ওই সময় মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে ছিলেন। তার ভাই জিয়াউর রহমান বিপ্লব র্যাব দিয়ে গুম করার হুমকি দিয়েছিলো। এ ঘটনায় তার স্বামী কোতয়ালী মডেল থানায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছিলেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় এতদিন মামলা করতে পারেননি জানিয়ে রুমানা বলেন, সরকার পতনের পর বরিশাল আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে কোতয়ালী মডেল থানা মামলা এজাহার হিসেবে রুজু করে। মামলার একমাত্র আসামি কবিরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
রুমানার দাবি কবিরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুমের রহস্য বের হবে। এতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ওই সময়ের র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান ও তার ভাই জিয়াউর রহমান বিপ্লবের জড়িত তা বেরিয়ে আসবে।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, ২০১০ সালের ২৩ ডিসেম্বর স্বামী আবুল হায়দারকে ফুসলিয়ে ঢাকা নিয়ে যায় কবির। পরদিন সকালে ঢাকা গিয়ে তাকে মহাখালী বন ভবনের সামনে রেখে হোটেলে সিট করতে যায়। তখন অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন লোক এসে স্বামী আবুল হায়দারকে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই দিন গুলশান থানায় আব্দুল হালিম হারুন জিডি করেন।
বাদী মামলায় আরো অভিযোগ করেন, গত ২ আগস্ট নগরীর বটতলা বাজার এলাকায় আসামি কবিরকে পেয়ে তার কাছে স্বামীর সন্ধান চান। তখন তিনি অসংলগ্ন কথা বলে অস্বাভাবিক আচরণ করেন। গত ৫ আগস্টের পর ঢাকার বিভিন্ন অফিস ও আলোচিত সমালোচিত আয়না ঘরে গিয়ে স্বামীর খোঁজ করে পাননি।
বাদী মামলায় আরো অভিযোগ করেন, আসামি কবিরসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন স্বামীকে হত্যা করে গুম করেছে। ছোট দুই সন্তানের জীবন রক্ষার জন্য এতদিন মামলা করেননি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এইচএম সজল বলেন, মামলার আসামী কবিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে।
আদালতের জিআরও এনামুল হক বলেন, আসামিকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডের আবেদনের শুনানির জন্য দিন ধার্য্য করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ