পাট ও বস্ত্র এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রীর বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব সোনালি ব্যাগ ও জুট জিও টেক্সটাইল বহুমুখী পাটপণ্য উদ্ভাবনের ফলে দেশে-বিদেশে পাটের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২৮২ ধরনের বৈচিত্র্যময় ও আকর্ষণীয় পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন হচ্ছে। এ ছাড়া ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন পাটজাত পণ্য উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে।
বর্তমানে পাট রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত পাটের ৭০ ভাগ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় খাত উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত শিল্পে বিনিয়োগ করার উদাত্ত আহ্বান জানান। গতকাল সকালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) হেলেন লাফেভের সঙ্গে বৈঠককালে এ আহ্বান জানান তিনি।
বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা বলেন, সরকারি পাট ও বস্ত্রকলগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ রয়েছে। আমাদের শিল্পকারখানাগুলো কৌশলগতভাবে যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। বেশির ভাগই বন্দরের কাছাকাছি। এ ছাড়া এসব খাতে আমাদের দক্ষ জনবল রয়েছে। নৌপরিবহন উপদেষ্টা দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের ডকইয়ার্ড নির্মাণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি সহায়তা কামনা করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসহ দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের অনুরোধ জানান।
মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বাংলাদেশের রেডি মেড গার্মেন্টের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসাবাণিজ্য ও অন্যান্য বিভিন্ন পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের গৌরবময় ৫০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। উভয় দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ঘাটতি দূরীকরণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামীতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত তৈরির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। বৈঠকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) সঞ্জয় কুমার বণিকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।