রাজধানীর হাতিরঝিলে দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান তামিম হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) উপপরিচালক মোহাম্মদ মামুন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে গতকাল তাকে ক্লোজড করে সাময়িক বরখাস্তের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসূত্র। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তামিম হত্যা মামলায় মামুন এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি।
এদিকে তামিম খুনের ঘটনায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবির সাংগঠনিক পদ স্থগিত করেছে বিএনপি। এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি তাকে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরসূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত রবির সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত থাকবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) মহাপরিচালক (ডিজি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল বলেছেন, মামুনকে ক্লোজ করে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে কাগজ পাঠানো হয়েছে।
বিএনপিসূত্র বলছেন, ১১ অক্টোবর রবিকে শোকজ নোটিস দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। পরে শেখ রবি যে জবাব দিয়েছেন তা সন্তোষজনক না হওয়ায় সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়। এ হত্যা মামলায় ৩ নম্বর আসামি রবি পলাতক আছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. রুহুল কবির খান বলেন, ‘বেসরকারি দীপ্ত টিভির কর্মী তামিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাতিরঝিল থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্তে যার নামই আসুক, সে যে-ই হোক ছাড় দেওয়া হবে না।’
ডিএনসিসূত্র বলেছেন, মামুন চট্টগ্রাম মেট্রোর উপপরিচালক থেকে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে উপপরিচালক (প্রশাসন), এরপর ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দার উপপরিচালক, তারপর ফের চট্টগ্রাম মেট্রোর উপপরিচালক হন। সেখান থেকে তাকে কয়েক মাস আগে নারায়ণগঞ্জে বদলি করা হয়। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর বৈষম্যের শিকার এমন দাবি করায় তাকে ঢাকায় এনে দক্ষিণের ডিডি করা হয়েছে।
সূত্র বলেছেন, হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্টের ফ্ল্যাটে তামিম হত্যাকান্ডের এক বছর আগে ডিএনসির সাব-ইন্সপেক্টর আবদুস সাত্তারের মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাট থেকে তামিমের পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। সাত্তার নিজেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আলোচিত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের মামাতো শ্যালক পরিচয় দিতেন। তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে সাব-ইন্সপেক্টর আবদুস সাত্তার বলেছেন, ডিবির হারুন অর রশীদ তার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তিনি কোনোভাবেই ডিডি মামুনের ঘনিষ্ঠ নন।
প্রসঙ্গত, তামিম হত্যাকান্ডে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন মো. আবদুল লতিফ, মো. কুরবান আলী, মাহিন, মোজাম্মেল হক কবির, বাঁধন ও মো. রাসেল। তারা সবাই চার দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।