ফেসবুকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগে প্রতারক চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির খিলগাঁও থানা পুলিশ। তারা হলেন- নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসির, আনোয়ার ওরফে তন্ময় ওরফে আকতারুজ্জামান, রোকসানা রহমান ওরফে রোকসানা, সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার, জেসমিন ওরফে জেসমিন বেগম, লিজা ও শাহানাজ আক্তার। গতকাল এসব তথ্য জানান ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সেজে বা প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার মতো বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে প্রলুব্ধ করে। তাদের এসব লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে কেউ ফাঁদে পা দিলে তাকে জিম্মি করে অর্থ ও মূল্যবান দ্রবাদি হাতিয়ে নেয়। গ্রেপ্তার নাসিরের নামে হত্যা চাঁদাবাজিসহ ৮টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গত ৯ অক্টোবর খিলগাঁও থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর মামলার বাদী ঢাকার নবাবগঞ্জের মো. নাসির উদ্দীন ফেসবুকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে ৬ অক্টোবর দুপুরে সীমার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে। ওইদিন সন্ধ্যায় সীমার কথামতো বাদী খিলগাঁও থানার টেম্পোস্ট্যান্ডের ১৩৬ দক্ষিণ গোড়ানের একটি বাসায় যায়। কিছুক্ষণ পর সীমা ও আনোয়ারসহ আরও কয়েকজন ওই বাসায় আসে। মামলার বাদী কিছু বুঝে ওঠার আগেই নাসির তাকে বিবস্ত্র করে মারধর শুরু করে। মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে এবং ধারণকৃত ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। সীমা নিজেকে ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে বাদীর মায়ের থেকে মোবাইলের মাধ্যমে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
বাদীর মা তৎক্ষণাৎ তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ৫ হাজার টাকা পাঠায়। এরপর তারা ভিকটিমের কাছে থাকা দুটি স্বর্ণের আংটি, একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও নগদ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আনোয়ার ভিকটিমের চোখ বেঁধে মোটরসাইকেলে করে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর ফেলে যায়। ৯ অক্টোবর মামলা হওয়ার পর পরপরই ভিকটিমের দেখানো মতে ওইদিন খিলগাঁও এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাসির, আনোয়ার, রোকসানা, সীমা, জেসমিন ও লিজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত সোমবার খিলগাঁও এলাকা থেকে শাহানাজ নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এই মামলায় মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।