মারমা ভাষায় প্রবারণা পূর্ণিমাকে বলা হয় 'ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে'। এ পূর্ণিমায় উৎসব পালন করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। এ উৎসবের মধ্যদিয়ে তিন মাস বর্ষাবাস শেষে বিহারে ফিরে আসা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের স্বাগত জানানো হয়। এটি পার্বত্যাঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যা কঠিন চীবর দানোৎসব নামে পরিচিত। প্রবারণায় যোগ দিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষের ঢল নামে বিহার এলাকায়।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় রাঙামাটি রাজ বনবিহারের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় প্রবারণা পূর্ণিমার বিশেষ প্রার্থনা। বর্ষাবাস শেষে বিহারে ফিরে আসা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সম্মান আর সংঘদান ও অষ্টপরিষ্কার দান করার জন্য রাঙামাটি রাজ বনবিহারে ঢল নামে হাজারো পুণ্যার্থী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী পুরুষের।
এ সময় বিশেষ প্রার্থনায় ধর্মীয় দেশনা দেন রাঙামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ ও আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। ভক্ত আর পুণ্যার্থীদের সাধু সাধু ধ্বনিতে প্রবারণার উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পরে পুরো রাজবন বিহার এলাকায়।
এসময় প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করেন রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবশীষ রায়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নিরূপা দেওয়ান, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান, রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন ও জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন তালুকদার দীপু।
রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবশীষ রায় বলেন, শান্তি সম্প্রতি আর মৈত্রিতে আবদ্ধ হয়ে জগতের সুখ শান্তি লাভ করতে এ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। যাতে আগামী বছরগুলো শান্তি কাটে সবার।
তিনি আরও বলেন, এবার প্রবরণা উৎসব হলেও হচ্ছেনা কঠিন চীবর দানোৎসব। পার্বত্যাঞ্চলে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা করেনি। তাই বড় কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। শুধু প্রার্থনা আর প্রদীপ প্রজ্বলন করে শেষ করা হচ্ছে ধর্মীয় উৎসব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবের মধ্যদিয়ে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে চলে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব। বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের আনুষ্ঠানিকভাবে দান করে পূর্ণতা লাভ করেন পুণ্যার্থীরা।
এবারও প্রবারণা উৎসবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদের ঢল থাকলেও ছিল না দেশি বিদেশি কোন অতিথি। তবে নিরাপত্তার কমতি ছিল না আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর। তাই অনেকটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সমাপ্ত হয় প্রবারণা উৎসব।
বিডি প্রতিদিন/মুসা