চাকরির বয়স বাড়ানোর দাবি প্রশাসন ক্যাডারের

এবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স ৬৫ বছর করার জন্য দাবি জানিয়েছে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এ দাবি গুরুত্ব পেয়েছে সরকারের কাছেও। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে আবেদন করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা চিঠি দেওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসনে চিঠিটি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। আশা করছি দ্রুতই একটা ফলাফল আসবে। জানা যায়, বর্তমানে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর। আর অবসরে যাওয়ার বয়সসীমা ৫৯ বছর। সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা অবিলম্বে ৩৫ বছর করার দাবিতে গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন চলছে। সম্প্রতি এ দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছিলেন চাকরিপ্রত্যাশী তরুণরা। এদিকে গত ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেন। তবে বয়স বাড়ানোর বিষয়টি যেহেতু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিধির আওতার মধ্যে পড়ে, তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অ্যাসোসিয়েশনের দাবিসংক্রান্ত চিঠি বা প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়স এর আগে যথাক্রমে ৩০ ও ৫৯ (মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের যথাক্রমে ৩২ ও ৬০) বছর করা হয়েছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান ৭২ দশমিক ৩ বছরে দাঁড়িয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের চাকরির অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৭ বছর। বিগত এবং বর্তমান সময়ে যেসব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকের বয়স ৬৭ বছরের ঊর্ধ্বে। অ্যাসোসিয়েশন সেই চিঠিতে জানিয়েছে, চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানদন্ড পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, বিশ্বের ১৬২টি দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে আবার এটি উন্মুক্ত। একই সঙ্গে অবসরের বয়সসীমা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ভেদে ৬৫ থেকে ৬৭ বছর এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭২ বছর। সরকারি চাকরিতে প্রবেশ এবং অবসরে যাওয়ার বয়স বৃদ্ধির বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে চাকরিপ্রত্যাশী এবং চাকরিরতদের পক্ষে আন্দোলন ও দাবি উত্থাপিত হয়েছে। মেধাভিত্তিক নতুন প্রজন্মের চাহিদাভিত্তিক কাক্সিক্ষত সংস্কারমুখী পুনর্গঠিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের সময়সীমা যথাক্রমে ৩৫ ও ৬৫ বছর করার জন্য অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয় সে চিঠিতে।