বগুড়ার খাল-বিলে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে লাল শাপলা। গ্রামবাংলার অকৃত্রিম রূপছায়া আর মায়া সবই যেন ধারণ করে আসছে শাপলা ফুল। জেলার বিভিন্ন গ্রামের মেঠোপথের ধারে জলাশয়, খাল-বিল আর নদী শাপলা ফুল নয়নাভিরাম রূপে সাজিয়েছে। শাপলার সৌন্দর্যে পুবের আকাশের সূর্যের রক্তিম আভাকে যেন আলিঙ্গন করেছে।
জানা যায়, বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, দুপচাঁচিয়া, গাবতলী, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামের খাল-বিল ও নদীতে চোখে পড়ে শাপলা ফুলের বিপুল সমাহার। গ্রামীণ প্রকৃতির এই শাপলা ফুলের বাহারি রঙে ছেয়ে গেছে উপজেলাগুলোর নদী, নালা, খাল-বিল। শাপলা পদ্মগোত্রের ফুল। জলে নিমজ্জিত নরম দন্ডের উপরিভাগে এ ফুল ফুটে থাকে। হেমন্তের ভোরে সবেমাত্র সূর্য আকাশে উঁকি দিচ্ছে। তখনই মেলতে শুরু করে লাল শাপলা। জেলার বিভিন্ন বিলের স্বচ্ছ পানিতে লাল শাপলা ফোটার দৃশ্য দেখে যে কারোরই মনে হবে পানিতে যেন কেউ লাল চাদর বিছিয়ে দিয়েছে। ১৩ থেকে ১৫টির মতো পাপড়ি হয় শাপলা ফুলে। পাপড়ির মাঝখানে হলুদ রঙের পরাগধানী থাকে। লাল এবং সাদা রঙের ফুল হয়। শাপলার পাতাও খুব সুন্দর। বড় গোলাকার পাতা পানির ওপর চমৎকারভাবে ভেসে থাকে।
বগুড়া জেলার সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নের নুরাইল বিলে শীতের শুরুতেই ফোটে লাল-সাদা শাপলা। শাপলার মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে পর্যটকরা ভিড় জমান বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। যেদিকে চোখ যায় কেবল লাল-সাদা শাপলা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সকালে নুরাইল বিলে নৌকার মাঝিরা পর্যটকদের নৌকা দিতে বসে থাকেন। সকাল থেকে বাড়তে থাকে পর্যটকের আনাগোনাও। নৌকায় বিলের আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেখা গেছে অনেককে। জেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানান, নুরাইল বিলের শাপলার সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই যাচ্ছেন। শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল বর্ষাকালে ফোটে। শাপলা ফুল গাছ ঔষধি গুণসম্পন্ন। দেশের সর্বত্রই জলাধারে শাপলা ফুল দেখা যায়। তবে অযত্ন অবহেলায় শাপলা ফুল হারিয়ে যেতে বসেছে। দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে হলে সবাইকে শাপলা ফুলের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত।