ব্রাজিলের উপকূলে তীক্ষ্ণ নাকবিশিষ্ট হাঙরের শরীরে কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সামুদ্রিক প্রাণীর দেহে মাদকের উপস্থিতি শনাক্ত করতে গিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, এ হাঙরগুলোর দেহে কোকেনের মাত্রা অন্যান্য জায়গার প্রাণীদের তুলনায় ১০০ গুণ বেশি।
মাদক পাচারকারীরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে বাঁচতে প্রায়ই মাদক সমুদ্রের পানিতে ফেলে দেন। ফ্লোরিডা ও দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলীয় অঞ্চলে এমন অনেক মাদক জব্দ করা হয়েছে। সামুদ্রিক প্রাণীদের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন।
ব্রাজিলের অসওয়ালদো ক্রুজ ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এ বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছেন। গবেষণার অংশ হিসেবে তারা ব্রাজিলের উপকূলে বসবাসকারী ১৩টি তীক্ষ্ণ নাকের হাঙরের শরীরে মাদকের পরীক্ষা চালান। হাঙরগুলো তাদের গোটা জীবনটাই সমুদ্র উপকূলের পানিতে কাটিয়েছে এবং দূষণের প্রভাবও বহন করেছে।
গবেষণায় লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি উইথ ট্যান্ডেম মাস স্পেকট্রোমেট্রি নামের পদ্ধতি ব্যবহার করে হাঙরের পেশি ও যকৃতের কলা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে তরলের মধ্যে অণুগুলো আলাদা করে সেখানে কোকেনের অস্তিত্ব পরীক্ষা করা হয়।
এই গবেষণা প্রথমবারের মতো প্রমাণ করেছে যে, সমুদ্রের অবাধে চলাচলকারী হাঙরের দেহেও মাদকের অস্তিত্ব থাকতে পারে। হাঙরের পেশি কলায় যকৃতের চেয়ে কোকেনের উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে।
গবেষকরা বলছেন, এ গবেষণার ক্ষেত্রটি সীমিত ছিল, তাই সামুদ্রিক প্রাণীর ওপর কোকেনের পূর্ণ প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এটি সামুদ্রিক পরিবেশে মাদক দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে আমাদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।
সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট নামক সাময়িকীতে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড ক্যারিবীয় সাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর এলাকা থেকে ১৪ হাজার ১০০ পাউন্ড কোকেন জব্দ করেছিল, যার আনুমানিক মূল্য ১৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল