ভারত সফরে দুজন সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। দুজনে জাতীয় দলে খেলছেন দেড় যুগের ওপর। দুজনের পারফরম্যান্সের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে দলের সাফল্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে ভূমিকা ছিল দুই সিনিয়রের। সাকিব বল হাতে সাফল্য পেলেও ব্যাটিংয়ে ছিলেন ব্যর্থ। অবশ্য রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টের ঐতিহাসিক জয়ে মুশফিকের ১৯১ রানের ইনিংসটি ব্যবধান গড়ে দিয়েছিল দুই দলের মাঝে। টিম ম্যানেজমেন্ট শতভাগ আত্মবিশ্বাসী মুশফিকের চওড়া ব্যাটের ওপর। তবে চিন্তিত বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ব্যাটিং ফর্ম নিয়ে। টিম ম্যানেজমেন্ট বিশ্বাস করেন, একটি বড় ইনিংস খেললেই ফের ছন্দে ফিরবেন সাকিব। স্পিন অলরাউন্ডারের মতো ছন্দ হারিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। গত বছর দারুণ সময় কাটালেও এবার নেতৃত্বের চাপে অনেকটাই বেসামাল তার ব্যাট। যদিও দল পরিচালনা করছেন দারুণভাবে। চলতি বছর তার নেতৃত্বে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। হেরেছে শ্রীলঙ্কার কাছে এবং সিরিজ ড্র করেছে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। চলতি বছর ৪ টেস্টের ৭ ইনিংসে রান করেছেন মাত্র ৯০। তাহলে কি নেতৃত্বের চাপে ছন্দ হারিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত? গত ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ নেতৃত্ব পান তিন ফরম্যাটে।
দারুণ একজন প্রতিভাবান ব্যাটার নাজমুল। ব্যাটিংয়ে দলের অন্যতম ভরসাও টাইগার অধিনায়ক। টেস্ট অভিষেক ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে। আগের বছর ঘরের মাটিতে অনূর্ধ্ব -১৯ যুব বিশ্বকাপে দারুণ খেলেছিলেন। পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে উড়িয়ে নেয় নিউজিল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে অভিষেকও হয় তার। প্রথম ইনিংসে ১৮ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১২ রান করেন। নাজমুলের অভিষেক হয়েছিল হঠাৎ। ২০২৩ সাল ছাড়া আর কোনো বছরেই ধারাবাহিক ছিলেন না নাজমুল। ২৯ টেস্ট ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরি করেছেন ৫টি। ৩টিই গত বছর এবং টানা দুই টেস্টে। দুটি আবার একই টেস্টের উভয় ইনিংসে। উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি দুটি করেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবীদের বিপক্ষে ৫৪৬ রানের ইতিহাসগড়া জয়ের ম্যাচের প্রথম ইনিংসে খেলেছিলেন ১৭৫ বলে ২৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৪৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেন ১২৪ রান। পরের টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেন ১০৫ রানের ইনিংস।
নাজমুল শান্ত এবারই জাতীয় দলের নেতৃত্বে রয়েছেন, তেমন নয়। সাকিবের অনপুস্থিতিতে পুনেতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণ মেয়াদে জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। ওয়ানডেতে দারুণ সময় কাটালেও টেস্টে পুরোপুরি ব্যর্থ। ওয়ানডেতে তিন ম্যাচ খেলে একটিতে সেঞ্চুরি করেন। টেস্টে ব্যর্থ পুরোপুরি। চলতি বছর যে চারটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, তার দুটিতে জিতেছে এবং দুটিতে হেরেছে। সাত ইনিংসে ব্যাটিং করে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। সাত ইনিংসে ১২.৮৬ গড়ে রান করেছেন ৯০। সর্বোচ্চ ৩৮, পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে। চলতি বছর তার ইনিংসগুলো যথাক্রমে ৩৮, ৪, ১৬, ২০, ১, ৬ ও ৫। ক্যারিয়ারে ২৬ টেস্টের ৫৫ ইনিংসে রান করেছেন ২৮.৫০ গড়ে ১৫৩৯। সেঞ্চুরি ৫টি এবং হাফ সেঞ্চুরি তিনটি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর ১৬৩, পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজ খেলতে নাজমুল বাহিনী আজ ঢাকা ছাড়ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে কি জ্বলে উঠবেন টাইগার অধিনায়ক?