আগের ম্যাচে তাণ্ডব চালানো ট্রাভিস হেড পেলেন গোল্ডেন ডাক-এর তেতো স্বাদ। তাতে কী! এবার জ্বলে উঠলেন জশ ইংলিস। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে উপহার দিলেন রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি। দুইশর কাছাকাছি পুঁজি নিয়ে আঁটসাঁট বোলিংয়ে স্কটল্যান্ডকে দেড়শও করতে দিল না অস্ট্রেলিয়া।
এডিনবরায় শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৭০ রানে। ১৯৬ রানের পুঁজি গড়ে স্বাগতিকদের তারা গুটিয়ে দেয় ১২৬ রানে। টানা দুই জয়ে তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজটি এক ম্যাচ বাকি থাকতেই নিজেদের করে নিল মিচেল মার্শের দল।
অস্ট্রেলিয়ার এই জয়ের নায়ক ইংলিস ৪৯ বলে করেন ১০৩ রান। বিস্ফোরক ইনিংসটি গড়ার পথে ৭টি করে চার ও ছক্কা মারেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। ইংলিসের ৪৩ বলের শতক দেশের হয়ে এই সংস্করণে দ্রুততম।
আগের রেকর্ডেও ছিল তার নাম, তবে যৌথভাবে। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যারন ফিঞ্চ এবং ২০২৩ সালে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ দিনের ব্যবধানে ইংলিস ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৪৭ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২৩ ম্যাচে এটি ইংলিসের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ফিফটি নেই একটিও।
এদিন বল হাতে আলো ছড়ান মার্কাস স্টয়নিস। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২৩ রানে ৪ উইকেট নেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৮ রানে ৩ উইকেট ছিল তার আগের সেরা বোলিং।
ঘন কুয়াশার কারণে খেলা শুরু হতে প্রায় ৪৫ মিনিট দেরি হয়। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই হেডকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। অভিষেকে রানের খাতা খুলতে না পারা জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক এবার করেন ১৬ বলে ১৬ রান। দুইজনেই পেসার ব্র্যাড কারির শিকার।
২৩ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে পথে রাখেন ইংলিস। তাকে সঙ্গ দেন ক্যামেরন গ্রিন। একপ্রান্তে ইংলিস আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বাড়াতে থাকেন রান, আরেক প্রান্তে টাইমিং করতেই ভুগছিলেন গ্রিন।
চার মেরে রানের খাতা খোলা ইংলিস পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ব্র্যাড হুইলকে দুই ছক্কার পর মারেন একটি চার। নবম ওভারে মার্ক ওয়াটকে ছক্কায় উড়িয়ে ২০ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। কিছুক্ষণ পরই ভাঙে গ্রিনের সঙ্গে তার ৫২ বল স্থায়ী ৯২ রানের জুটি। যেখানে গ্রিনের অবদান ২৯ বলে ৩৬।
১৪তম ওভারে ক্রিস গ্রিভসের বলে ছক্কা মেরে বল মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন ইংলিস। কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা। এরপর ১৮তম ওভারে কারিকে টানা দুই ছক্কায় ৮৮ থেকে তিন অঙ্কের ঠিকানায় পা রাখেন তিনি।
ক্রিস সোলকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় কাভারে সহজ ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ইংলিসের চমৎকার ইনিংস। শেষ ওভারে ২ ছক্কা ও এক চারে ৭ বলে ১৭ রান করেন টিম ডেভিড।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ে সামনে দাঁড়াতেই পারেনি স্কটল্যান্ড। তাদের ইনিংসে দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেন কেবল দুইজন। ওপেনার জর্জ মানজি ৯ বলে ১৯ আর ব্র্যান্ডন ম্যাকমুলান চারটি করে ছক্কা চারে ৪২ বলে করেন সর্বোচ্চ ৫৯।
শুরু থেকে চমৎকার বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নিতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই করে যান ম্যাকমুলান। ৩৮ বলে এই সংস্করণে পঞ্চম ফিফটি করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ব্যবহৃত সব বোলারাই পান উইকেট। ২৩ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন মার্কাস স্টয়নিস। এই সংস্করণে যা তার ক্যারিয়ার সেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ১৯৬/৪ (ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ১৬, হেড ০, ইংলিস ১০৩, গ্রিন ৩৬, স্টয়নিস ২০*, ডেভিড ১৭*; ম্যাকমুলান ৩-০-২১-০, কারি ৪-০-৩৭-৩, হুইল ৪-০-৫১-০, ওয়াট ৪-০-৪৪-০, গ্রিভস ২-০-২৬-০, সোল ৩-০-১৭-১)
স্কটল্যান্ড: ১৬.৪ ওভারে ১২৬ (মানজি ১৯, জোন্স ১, ম্যাকমুলান ৫৯, বেরিংটন ৫, টিয়ার ৫, লিস্ক ৭, ওয়াট ৪, গ্রিভস ৬, সোল ০, হুইল ৫, কারি ১*; বার্টলেট ৩-০-২০-১, হার্ডি ২-০-১৩-১, স্টয়নিস ৩.৪-০-২৩-৪, অ্যাবট ২-০-১৪-১, জ্যাম্পা ৪-০-৩০-১, গ্রিন ২-০-১৬-২)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৭০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: জশ ইংলিস
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২-০ তে এগিয়ে
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ