বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের ব্যাপক প্রসার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চাকরি থেকে শুরু করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এআই কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ ও গবেষণা।
প্রযুক্তি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো চ্যাটবটসহ বিভিন্ন এআইভিত্তিক সেবা চালু করার কারণে অনেক পেশাজীবী তাদের চাকরি হারিয়েছেন। এছাড়া ভবিষ্যতে আরও অনেকেই এই প্রযুক্তির কারণে চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। এর মধ্যেই চ্যাটজিপিটি তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান এমন একটি কাজের কথা বলেছেন, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কখনোই সম্পূর্ণরূপে করতে পারবে না।
স্যাম অল্টম্যানের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কখনো লেখকদের কাজ পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে পারবে না। যদিও এআই চ্যাটবটগুলো লেখকদের কাজে সহায়তা করতে পারে, তবে এটি সৃষ্টিশীলতার জায়গায় কখনো মানুষের বিকল্প হতে পারবে না। অল্টম্যান বলেন, ‘ভালো লেখার জন্য চ্যাটবটের আরও অনেক উন্নতি করা প্রয়োজন। এআইয়ের তৈরি করা অনেক লেখাই নিম্নমানের এবং শিক্ষার্থীদের খারাপ অ্যাসাইনমেন্টের পেছনে এআই ব্যবহার অন্যতম কারণ।’
অল্টম্যানের মতে, এআই লেখকদের জন্য কেবল একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে। কিন্তু তাদের প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, যদিও এআই চ্যাটবট ব্যবহার করে স্কুলের বই বা অ্যাসাইনমেন্ট লেখা হচ্ছে, তবুও এটি মানব লেখকদের ছাপিয়ে যেতে পারবে না। ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নত হলেও, জনপ্রিয় এবং গভীর অর্থবহ উপন্যাসগুলো মানুষের হাত দিয়েই লেখা হবে।
এআইয়ের সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে অল্টম্যান বলেন, যখন আমি একটি অসাধারণ বই শেষ করি, তখন আমার প্রথম ইচ্ছা হয় লেখকের জীবন সম্পর্কে জানার। একজন লেখকের জীবনের অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা ও সৃজনশীলতা সম্পর্কে জানার আগ্রহ আমার মধ্যে জাগে। এআইয়ের লেখা কোনো কাজ সেই অনুভূতি কখনোই তৈরি করতে পারবে না।
স্যাম অল্টম্যানের এই দৃষ্টিভঙ্গি এটাই প্রমাণ করে যে, লেখালেখির জগতে সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে মানব মস্তিষ্কের জায়গা এখনও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। যদিও এআই চ্যাটবট প্রযুক্তি দিন দিন উন্নত হচ্ছে, তবে লেখকদের প্রতিস্থাপনের মতো পর্যায়ে এখনও তা পৌঁছায়নি এবং খুব শিগগিরই তা সম্ভব হবে না।