৩ জুন, ২০২৩ ১৮:৪৩

কুড়িগ্রামে মালচিং পদ্ধতিতে করল্লা চাষ, কৃষকের মুখে হাসি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে মালচিং পদ্ধতিতে করল্লা চাষ, কৃষকের মুখে হাসি

কুড়িগ্রামে বিষমুক্ত মালচিং পদ্ধতিতে করল্লা চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ পদ্ধতিতে চাষ করে অধিক মুনাফা পাওয়ায় কৃষকের মুখে এখন খুশির ঝিলিক। একসময় অতিরিক্ত সার-কীটনাশক ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সার কীটনাশক ছাড়াই স্বল্প খরচে করল্লা চাষ করে অধিক উৎপাদন হওয়ায় সাড়া ফেলেছে এ চাষ পদ্ধতি। 

জেলার রাজারহাট উপজেলায় এ পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে করল্লা চাষ। প্রথম মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে এখানে। ফলন ভালো ও করল্লার আকৃতি বড় হওয়ায় আশপাশের চাষিরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের এ চাষ করতে সহায়তা করছে। এ পদ্ধতি সম্প্রসারণ করা গেলে জেলায় করলাসহ সবজি চাষে ঘাটতি কমে যাবে এবং সারা বছর সবজির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের মীরের বাড়ি গ্রামের কৃষক মুকুল মিয়া এ বছর প্রথম তার ১২শতক জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে করল্লা চাষ করেছেন। গত মার্চ মাসের শুরুতে চারা লাগিয়েছেন। এতে খরচ পড়েছে মাত্র ১৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে চারাগুলোতে খরচ হয়েছে সাড়ে তিন হাজার টাকা, পলিথিন কিনে মালচিং করতে খরচ আড়াই হাজার টাকা এবং জাংলি, সেচ ও কীটনাশকসহ অন্যান্য বাবদ খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। দুই মাস পর এপ্রিলের শুরুতে করল্লা বিক্রি করা শুরু করেছেন তিনি। ৩১মে পর্যন্ত ৪১ হাজার টাকার করল্লা বিক্রি করেন বলে দাবি কৃষকের। আরও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার করল্লা বিক্রির আশা করছেন তিনি। 

কৃষিবিদ সোহেল রানা জানান, আধুনিকীকরণ হওয়ার সাথে সাথে প্লাস্টিক মালচিংয়ের ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে। এটি আধুনিক চাষাবাদের একটি উন্নত পদ্ধতি। হাজার বছর ধরেই আমাদের পূর্ব পুরুষরা মালচিং ব্যবহার করে আসছিলেন। এর ফলে ফসলের দ্রুত বৃদ্ধি হয়। মাটির রস সংরক্ষণ এবং আগাছার যন্ত্রণা থাকে না। তাই পরিচর্যা ব্যয়ও কম। এটি সহজলভ্য ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় কৃষকরা সহজে এই চাষে ঝুঁকে বেশি আগ্রহ দেখান। তবে কৃষকদের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে এ পদ্ধতিতে অনেক কৃষক চাষ করবেন এবং লাভবান হবেন। 

নতুন পদ্ধতির কৃষক মুকুল মিয়া জানান, আমি এবার  প্রথম মালচিং পদ্ধতিতে করল্লা চাষ করেছি। মালচিং প্লাস্টিক ব্যবহার করে সবদিক দিয়ে লাভবান হয়েছি। এখন পর্যন্ত আমার খরচ বাদে ২৮ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এ পদ্ধতি একবারেই জমি তৈরি করে বীজ বপন করতে হয়। এতে বারবার সার, কীটনাশক ও পানি দিতে হয় না। পরিচর্যা না থাকায় শ্রমিকও লাগে না। ফলে জমির খরচ অর্ধেক কমে গেছে। এই পদ্ধতিতে দ্বিগুণ ফলন পেয়েছি। এ ব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার সাথী জানান, বর্তমানে বিশেষভাবে তৈরি পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক দিয়ে মালচিং পদ্ধতিতে কৃষককে করল্লা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এতে অল্প খরচে কৃষক অধিক লাভবান হতে পারেন। আশা করছি এতে জেলায় সবজির ব্যাপক উৎপাদন হবে । 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর