রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গত ২২ দিন ধরে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদ শূন্য থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পরীক্ষার কমিটি গঠন, মূল সনদপত্র উত্তোলন, একাডেমিক কমিটির সভা, বিদেশ গমনসহ নানা কাজে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে স্থবির হয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম।
গত ১৯ মার্চ উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহানের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে শূন্য রয়েছে প্রশাসনের এই শীর্ষ পদ দুটি। এ দুই পদে নিয়োগ পেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯৫ জন অধ্যাপক সংশ্লিষ্ট দফতরে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শীর্ষ দুই পদ খালি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক, প্রশাসনিক ও শিক্ষা কর্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করা সম্ভব হচ্ছে না। পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পরীক্ষার কমিটি গঠন, মূল সনদপত্র উত্তোলন, ভর্তি কার্যক্রম, ফিন্যান্স কমিটি, একাডেমিক কমিটির সভা, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ঋণ পাস ও বিদেশ গমন, অন্যান্য আর্থিক খাত, বিভিন্ন সভা-সেমিনার আয়োজনের কাজ আটকে আছে। এছাড়াও গত ৪ ফেব্রুয়ারির পর আর কোনো সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দফতর থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত হলেও উপাচার্যের স্বাক্ষর না থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বষের্র, আইন, ইসলামিক স্টাডিজ, ভেটেনারী এন্ড এনিমেল সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণি বিদ্যা, নৃবিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, এগ্রোনমি এন্ড এগ্রিকালচার বিভাগের মাস্টার্সের, ফিসারিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ শাখা সূত্রে জানা গেছে, মূল সনদ উত্তোলনের জন্য প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা আবেদন করছে। বুধবার পর্যন্ত ৬০৫টি সনদ প্রস্তুত থাকলেও উপাচার্যের স্বাক্ষর না থাকার কারণে সনদগুলো দেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইমেরিটাস অরুণ কুমার বসাক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিভাবক থাকবে না, সেটা তো হওয়ার কথা না। হয়তো এখানে কোনো সংকট আছে, তাই দেরী হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মূলত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের কোনো হাত নেই। এটা করেন রাষ্ট্রপতি। যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকলে প্রশাসনিক কাজে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। তাই উপাচার্য দ্রুত সময়ে নিয়োগ দিলে ভালো হয়। নিশ্চয় অতি দ্রুত যোগ্য উপাচার্য, উপ-উপাচার্য রাবিতে নিয়োগ পাবেন।’
বিডি প্রতিদিন/১১ এপ্রিল ২০১৭/হিমেল