দেশব্যাপী বিজ্ঞানের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিজ্ঞানের বিপক্ষে প্রচলিত নেতিবাচক ধারনা, প্রচারনা ও কুসংস্কার সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে আজ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্বাবিদ্যালয়ে (শেকৃবি) একটি বিজ্ঞান র্যালি ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি’র অঙ্গসংগঠন ‘কর্নেল অ্যালায়েন্স ফর সায়েন্স’র বাংলাদেশ চ্যাপ্টার অ্যালায়েন্স ফর সায়েন্স-বাংলাদেশ ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে তা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার সর্ম্পকে সচেতনতা ও জনমত গঠনের লক্ষ্যে বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে অ্যালায়েন্স ফর সায়েন্স ওয়ার্ল্ড আর্থ ডে উপলক্ষ্যে (২২ এপ্রিল) বিশ্বের ৫০০ টির বেশি শহরে একযোগে মার্চ ফর সায়েন্সসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আজ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্বাবিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে সকাল ১০ টায় মার্চ ফর সায়েন্স শিরোনামে একটি র্যালি বের হয়।
বিজ্ঞানের পক্ষে নানান শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে এই র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন শেকৃবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীসহ প্রায় ৩ শতাধিক বিজ্ঞানপ্রেমী তরুণ-তরুণী। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক পদক্ষিণ করে।
র্যালি শেষে সকাল পৌনে ১১টায় শেকৃবি কৃষি অনুষদের সেমিনার কক্ষে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উর্ধ্বতন যোগাযোগ কর্মকর্তা এম আব্দুল মোমিন। শেকৃবি উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক আহম্মেদের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট জিন বিজ্ঞানী ও গবেষক ড. আবেদ চৌধুরী ও দৈনিক প্রথম আলো’র বিজ্ঞান সাময়িকী ‘বিজ্ঞান চিন্তা’র সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।
প্রফেসর ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম বলেন, একবিংশ শতাব্দী হল তথ্য ও প্রযুক্তির সময়। কৃষি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটি, পানি ও বায়ু দূষিত হচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) কৃষি ও পরিবেশ সংক্রান্ত যে উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা বিবেচনা করে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে।
ড. আবেদ চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশীয় প্রাচীন ধানের জাতগুলোকে টিকিয়ে রাখতে দেশের ৯৯ শতাংশ জমিতে উন্নত জাতের ধান চাষাবাদের পাশাপাশি অন্তত ১ শতাংশ জমিতে হলেও দেশীয় জাতের ধানের চাষাবাদ করা উচিত। টেকনোলজি বিকাশের সাথে যাতে আমাদের নিজস্ব হেরিটেজ হারিয়ে না যায় সে দিকে আমাদের নজর রাখতে হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, হারিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও ফসলের জাতকে এলাকাভিত্তিক চাষাবাদের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
শেকৃবি গবেষণা সিস্টেম (সাউরেস) এর পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শেকৃবির প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. সেকেন্দার আলী ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল হক বেগ। সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অ্যালায়েন্স ফর সায়েন্স-বাংলাদেশ'র লীড ও কর্নেল ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং ফেলো মো. আরিফ হোসেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার