ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের চাকরির দাবিতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কে এম নূর-উন-নবীকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী। আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে উপাচার্যকে তাঁর কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এদিকে এ কর্মসূচির সঙ্গে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল শেখ।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে ছাত্রলীগের কেউ কেউ আবেদন করেন। তবে কারা করেছেন, তা জানা যায়নি। এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর একটি পক্ষ নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে হাইকোর্ট ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিতের আদেশ দেন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, প্রত্যক্ষদর্শী ও অবরুদ্ধ করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সূত্র জানায়, আজ বুধবার সকাল থেকে উপাচার্যের কক্ষে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সভা চলছিল। সভা চলা অবস্থায় বেলা ১১টার দিকে ছাত্রলীগের নামে স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কক্ষের সামনে বারান্দায় বসে পড়েন। এর নেতৃত্বে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতারা। এর ফলে উপাচার্য তাঁর কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তবে উপাচার্যের কক্ষে সভায় থাকা শিক্ষকরা বেরিয়ে গেলেও উপাচার্য তাঁর কক্ষ থেকে এখনো বের হতে পারেননি।
এ বিষয়ে উপাচার্যের কক্ষের সামনে অবস্থান নেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মৃতিশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘যোগ্যতার ভিত্তিতে ছাত্রলীগের নেতাদের অ্যাডহক ভিত্তিতে চাকরি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলাম। উপাচার্য স্যার বহুবার কথা দিয়েছেন। কিন্তু চাকরি আর হয়নি। কেননা ৫ মে তাঁর চাকরির মেয়াদের শেষ দিন। শেষ পর্যন্ত আমরা বাধ্য হয়েছি এভাবে আন্দোলন করতে। ’
অপরদিকে উপাচার্য এ কে এম নূর-উন-নবী বলেন, ‘সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সঙ্গে সভা চলাকালে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা এসে চাকরি দেওয়ার দাবি জানায়। এই চাকরি আমি কীভাবে দেব? এটি দিতে পারে ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন)। এছাড়া সম্প্রতি ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও তা হাইকোর্টে রিট করার কারণে বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ডায়াবেটিসের পেশেন্ট। আমাকে নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয়। আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এসব কথাও শিক্ষার্থীদের বলেছি। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। আমি এখনো অবরুদ্ধ। ’
বিডি প্রতিদিন/ ৩ মে ২০১৭/ ই জাহান