জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে রবিবার। কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই পার হয় প্রথম দিনের পরীক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু সোমবার প্রক্সি দেয়ার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে আটক করা হয় তিনজনকে।
আটককৃতরা হল- জাবির ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল ইসলাম সালমান (১৯), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান রাজ্জাক (১৯) ও তাদের স্কুলের বন্ধু আবদুল আল নোমান (২০)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় ‘এ’ ইউনিটের (গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ) ২য় শিফটের পরীক্ষা চলাকালে প্রবেশপত্রের ছবির সাথে মিল না পাওয়ায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে রাজ্জাককে আটক করে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন হল পরিদর্শকরা। পরে রাজ্জাকের দেয়া তথ্যানুযায়ী আটক করা হয় তার স্কুল বন্ধু নোমানকে। প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রাজ্জাককে। সেখানে নিজের দোষ স্বীকার করে সে বলে, “আমি সালমানের কথামত প্রক্সি দিতে এসেছিলাম। সে বলেছিল প্রক্সি দিলে কোন সমস্যা হবে না। সে আমাকে ২ লাখেরও বেশি টাকা দিবে বলেছিল।”
রাজ্জাকের দেয়া তথ্যানুযায়ী এ পর্যায়ে সালমানকে আটক করে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। সালমান জানায়, “রাজ্জাক আমার বন্ধু। এছাড়া শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বন্ধু সারোয়ার পড়াশোনা করে। সারোয়ারের ছোট ভাইয়ের হয়ে প্রক্সি দেয়ার জন্য আমি রাজ্জাকের সাথে সারোয়ারের তিন লাখ টাকার চুক্তির সমন্বয় করে দিই। বাকি সব কথাবার্তা তাদের মধ্যে হয়েছে। আমি কিছুই জানিনা।”
পরে আটককৃত তিনজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, “ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। আমরা বিষয়টি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থাপন করবো। তারা যে ব্যবস্থা দেবেন তাই কার্যকর করা হবে।”
আটককৃতরা সরাই নোয়াখালী জেলার। এদের মধ্যে জাবি শিক্ষার্থী সালমান নোয়াখালীর বুড়িরচর থানার জাকির হোসেনের ছেলে। সে নোয়াখালীর এ এম উচ্চ বিদ্যালয় ও বাংলাদেশ নেভী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিল। প্রক্সি পরীক্ষা দেয়া রাজ্জাক নোয়াখালীর হাতিয়ার মৃত হাবিব উল্লাহ বাহারের ছোট ছেলে। সে নোয়াখালীর আলী আহমেদ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও সরকারী বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে। এছাড়া তাদের সাথে আটককৃত স্কুল বন্ধু নোমানের বাড়িও নোয়াখালীর একই এলাকায়।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন