বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) এক প্রেমিক যুগলকে মারধরের জের ধরে ছাত্রলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেলে কলেজে (রমেক) ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১টায় কেন্দ্রীয় মসজিদের পেছনে বহিরাগত এক যুগলকে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রাজ মারধর করে। ঘটনাস্থলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আহসান মারধরে বাধা দিলে রাজ ক্ষিপ্ত হয়ে যুগল ও আহসানকে একসঙ্গে মারধর করে। পরে রাজসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আহসানকে দফায় দফায় মারধর করে এবং বিভিন্ন ধরনের মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখায়। পরে সন্ধ্যায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহসানকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসার জন্য গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুনরায় ধাওয়া করে। একপর্যায়ে আহসান এবং গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাহিদ মন্ডলকে মারধর করে। তাদের দুজনকেই গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের দু'পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ যুক্ত হয়ে ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একত্র হয়ে আহসানের বহিষ্কারের দাবিতে স্লোগান দেয়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে রড, স্ট্যাম্প, কিরিচ, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন না করায় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে রয়েছে।
এ বিষয়ে প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. একে এম ফরিদ-উল ইসলাম বলেন, আমি বাইরে আছি, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য পাঠিয়েছি তারাই মীমাংসা করে দেবে। তবে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হলেও তাদের নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।
সহকারী প্রক্টর এইচ এম তারিকুল ইসলাম বলেন, তাদের দু’পক্ষকেই নিয়ে বসেছিলাম কিন্তু তা সমাধান করা সম্ভব হয়নি তাই দু’পক্ষকেই লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য বলেছি। পরে আমরা টিমের সদস্যরা আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া বলেন, আমাদের কর্মীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রধানমন্ত্রী বলার পরেও ওই শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন, মানববন্ধন, মিছিল করে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত করতে চেয়েছিল। যাদের মারধর করা হয়েছে তারা সবাই নেত্রীর কথা অমান্য করে আন্দোলনে নেমেছে।
এ বিষয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোমতাজুল ইসলামের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল