দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) প্রায় দুই মাস যাবত শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থার নিরসন হয়নি।
আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বৈঠক করেন বেতন বৈষম্য দূর করার দাবিতে গত ১৪ নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ও প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বৈঠকে কোন সমাধান হয়নি।
এদিকে সিএসই ও বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের ক্লাশ ও পরীক্ষা চালুর দাবীতে আন্দোলন করে আসছে। শিক্ষার্থীরাও বৃহস্পতিবার একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ অন্যান্য শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
পরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয় পরীক্ষা ও ক্লাশ চালু করা হবে। ২৭জানুয়ারি থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা রাতে অবস্থান তুলে নেন।
তবে দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলনে অটল থাকার কথা বলছেন শিক্ষকরা। শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির পর রবিবার থেকে ফের আন্দোলন শুরুর কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে শিক্ষকদের আবারও আলোচনায় বসার কথা রয়েছে, সমাধান বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান হাবিপ্রবি’র প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ খালেদ হোসেন।
ওই আলোচনায় হাবিপ্রবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেম, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলম, প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সহসম্পাদক প্রফেসর ড. এস এম হারুনুর রশিদসহ অন্যান্য নেতারা এবং আন্দোলনরত সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক কৃষ্ণ চন্দ্র রায়সহ ৬১ জন সহকারী অধ্যাপক উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে আন্দোলনরত সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপকদের প্রতিনিধি কৃষ্ণ চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের জানান, দাবির ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাবো না।
হাবিপ্রবি’র প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ খালেদ হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে সিএসই এবং বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের স্থগিত ক্লাশ ও পরীক্ষা আগামী ২৭ জানুয়ারী থেকে নেয়া হবে।
হাবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. সফিউল আলম জানান, বৃহস্পতিবারের আলোচনাটি ছিল প্রাথমিক আলোচনা।
উল্লেখ্য, বেতন বৈষম্য দূর করার দাবিতে গত ১৪নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৬১ জন সহকারী অধ্যাপক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক বিধান চন্দ্র হালদারের কক্ষে যান। সেখানে তাদের ওপর হামলা, মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে পরের দিন থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে অনশনে যান পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষক ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয় ভর্তি পরীক্ষা এবং কর্মকর্তা ও শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন