কৃষক, শ্রমিক দুর্নীতি করে না, দুর্নীতি করে শতকরা পাঁচ ভাগ শিক্ষিত সমাজ। শিক্ষকরা ক্লাসে যায় না কিন্তু মাস শেষে ঠিকই বেতন নেন। ক্লাশে গেলেও তারা বই দেখে পড়ান। এটাও দুর্নীতি। কৃষকরাই বাংলাদেশের রিয়েল হিরো। তারা আমাদের খাবার জোগায়। তারা নির্ভেজাল ও দুর্নীতিমুক্ত বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান।
শনিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাবসায় প্রশাসন অনুষদ অডিটোরিয়ামে 'বাংলাদেশ সোসাইটি ফর বায়োকেমেস্ট্রি এ্যান্ড মলকিউলার বায়োলজি কনফারেন্স-২০১৯' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্টিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, শিল্প কারখানা ও অন্যান্য কারণে আজকে বাংলাদেশের প্রায় শতকরা ১৫ ভাগ কৃষিজ জমি হ্রাস পেয়েছে। এর পরেও আজকে বাংলাদেশে আগের থেকে তিনগুন বেশি খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। বর্তমান বাংলাদেশ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ।
তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী একজন মানুষও খাবারের ঘাটতির জন্য মারা যায়নি। যারা মারা গিয়েছে পানিতে ডুবে বা অন্য কোনো ভাবে।
তিনি বলেন, যখন বন্যার পানি নেমে গেলো কৃষক তার গোয়ালে থাকা একটা গরু নিয়ে রাতের আধারে বেরিয়ে পড়লেন। কৃষক হারিকেনের আলোয় জমি চাষ করবেন। কিন্তু লাঙ্গল টানার জন্য তার দরকার দুইটি গরু। তার একটি গরু হারিয়ে গিয়েছে তাই নিজের স্ত্রীকেই ব্যবহার করলেন জমি চাষে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে এখন ৪৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে আমি সেবার সেরা বলবো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে। কারণ তাদের কৃষির নানাবিদ আবিষ্কারের ফলে দেশে কৃষির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। দেশের মানুষ খাবার নিয়ে নিশ্চিন্ত রয়েছে। শুধু কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে।
তিনি বলেন, প্রযুক্তিতে উৎকর্ষতা সাধন করছে পুরো বিশ্ব। একটা সময় আসবে যখন মানুষের কাজ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা। আর সেই পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করছে।
প্রফেসর মান্নান বলেন, আমাদের তেল নেই, সোনা নেই তবে আমাদের রয়েছে পর্যাপ্ত মানবসম্পদ। আমাদেরকে এই মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৯ লাখ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি শিক্ষার্থী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। পৃথিবীর ১১২টি দেশের মোট জনসংখ্যাই এত নেই।
সেমিনারে চেয়ার ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। বাংলাদেশ সোসাইটি ফর বায়োকেমেস্ট্রি এ্যান্ড মলকিউলার বায়োলজি এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হাসিনা খানসহ আরো অনেকে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন