২৯ এপ্রিল, ২০১৯ ১৪:১৫

ববি উপাচার্যকে ২৬ মে পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটি, শিক্ষার্থীদের উল্লাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:

ববি উপাচার্যকে ২৬ মে পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটি, শিক্ষার্থীদের উল্লাস

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. ইমামুল হক

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হককে আগামী ২৬ মে পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। দীর্ঘ ১ মাসেরও বেশী সময় ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সোমবার (২৯ এপ্রিল) তার ৪৬ দিনের ছুটি অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আব্দুল হামিদ। একই সাথে ট্রেজারার অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব হাসানকে তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানা গেছে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হককে ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে ১১ এপ্রিল থেকে ২৬ মে পর্যন্ত মোট ৪৬ দিনের ছুটি মঞ্জুর করেছেন। উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ট্রেজারার অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব হাসান নিজ দায়িত্বে অতিরিক্ত উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। চ্যান্সেলরের অনুরোধক্রমে এই আদেশ জারি করা হয়েছে বলে অফিস আদেশে উল্লেখ রয়েছে। 

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটির সদস্য রাম চন্দ্র দাস এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে সোমবার দুপুরের পর উপাচার্য প্রফেসর ইমামুল হককে তার মেয়াদ শেষের আগের দিন পর্যন্ত (২৬ মে) ছুটিতে পাঠানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে আনন্দে মেতে ওঠেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা। উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থী আন্দোলনের ৩৪তম দিন সোমবার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা যখন অবস্থান কর্মসূচী পালন করছিলেন, তখনই খবর আসে উপাচার্যকে পূর্ন মেয়াদে (২৭ মে তার ৪ বছর মেয়াদ শেষ) ছুটিতে পাঠানোর। মুহূর্তে অবস্থান কর্মসূচি পরিণত হয় আনন্দ উল্লাসে। এর মধ্য দিয়েই দীর্ঘ ৩৪ দিনের আন্দোলনের পরিসমাপ্তি এবং অচলাবস্থার নিরসন হয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

আন্দোলকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম নেতা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের দাবি ছিল উপাচার্যকে অপসারণের। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর তাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছেন। পূর্ণ মেয়াদে ছুটিতে থাকলে তিনি (উপাচার্য) আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না। তাই রাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীরা মেনে নিয়েছে। এই মুহূর্ত (সোমবার দুপুর) থেকে উপাচার্যের অপসারণ দাবির আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

এদিকে আন্দোলন প্রত্যাহার করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল করেছে। কাল মঙ্গলবার তারা ক্যাম্পাসে বড় শোডাউন করে আনন্দ মিছিল করবেন। আনন্দ মিছিলের পর শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। 

শিক্ষার্থীরা ক্লাশ-পরীক্ষায় কবে ফিরছে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী নেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়। শিক্ষার্থীরা ক্লাশ-পরীক্ষায় ফিরতে উদগ্রীব বলে তিনি জানান। 

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, উপাচার্যকে পূর্ণ মেয়াদে ছুটি দেওয়ায় শিক্ষক সমিতি আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী প্রশাসনের নির্দেশক্রমে অতি দ্রুত ক্লাশে ফিরে যাবেন তারা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান জানান, উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ট্রেজারার উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন। মঙ্গলবার থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে বলে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের উদ্বৃতি দিয়ে জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর