১৮ জুন, ২০১৯ ২০:০৪

ছাত্রলীগের কারণে উত্তপ্ত শরণখোলা সরকারি কলেজ!

বাগেরহাট প্রতিনিধি:

ছাত্রলীগের কারণে উত্তপ্ত শরণখোলা সরকারি কলেজ!

ছাত্রলীগের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও তাদের অনৈতিক দাবি পূরণ না হওয়ায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বাগেরহাটের শরণখোলা সরকারি কলেজ। বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষাসহ কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ। এসব বিষয়ে বাধা প্রদান করায় কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতির জন্য কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কিছু নেতকর্মীকে দায়ী করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।  

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, রমজানে ইফতার পার্টির নামে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাব্বির বহিরাগত অছাত্রদের নিয়ে কলেজের তহবিল থেকে চাঁদা দাবি করে। ওই চাঁদার টাকা না পেয়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তারা ভর্তি ফরমে সরকারি নিয়মে টাকা নেওয়াকে অতিরিক্ত বলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। এছাড়া তারা কলেজের মসজিদের এসি ছেড়ে সেখানে বসে গল্প করা, ফেসবুক চালানো, সন্ধ্যার পরে মহিলা হোস্টেলের সামনে আড্ডাসহ মাদক সেবন করায় বাধা দেওয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। এমনকি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ি কলেজের বিভিন্ন স্থানে টাঙানো ফেস্টুন-ব্যানার, পোস্টার অপসারণের পুরনো ঘটনাকে একটি ইস্যু তৈরী করে। 

তারা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন নেতার ছবি 'অধ্যক্ষ অপসারণ করেছে' বলে তার বিরুদ্ধে ছবি অবমাননার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে মানহানিকর বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়ে কলেজের পরিবেশকে উতপ্ত করে তোলে।

শরণখোলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আলম ফকির বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাব্বির তার কলেজের নিয়মিত ছাত্র নয়। সে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শরণখোলা সরকারি কলেজ ক্যাম্পারে ছাত্র। তার নেতৃত্বে শিক্ষাসহ কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ‘ক্লিন ক্যাম্পাস’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কলেজের যত্রতত্র টাঙানো সব ধরণের ব্যানার-ফেস্টুর, পোস্টার অপসারণ করা হয়েছে। এটাকে তারা ভিন্নখাতে নেওয়া অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কলেজের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে প্রশান, রাজনৈতিক নেতাসহ সকলের সহযোগীতা চাওয়া হয়েছে। 

শরণখোলা উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক হাসান মীর বলেন, এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগ বিব্রত। অধ্যক্ষ নুরুল আলম ফকির আমার কাছে কয়েকজন কলেজ ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

শরণখোলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আকন ও সহ-সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ করা হয়েছে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বলেন, সরকারি নিয়মের বাইরে ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে কলেজের কিছু ছাত্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। অপরদিকে, অধ্যক্ষের করা অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। 

শরণখোলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাব্বির বলেন, কলেজের ভর্তি ফরমে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগের নামে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।   


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর