ছাত্রলীগের কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বহিষ্কার করাসহ চার দফা দাবিতে টানা এক মাস তিন দিনের অবস্থান কর্মসূচির পর এবার আমরণ অনশন শুরু করেছেনে ‘ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা’। আজ শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবার কথা জানিয়েছে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত বিক্ষুদ্ধ এই অংশটি।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি আদায়ে ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। তবে এই সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের উচ্চ পর্যায় থেকে কোনো আশ্বাস না মেলায় তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত প্রায় ৩০ নেতাকর্মী এতে অংশ নিচ্ছেন।
তাদের চার দফা দাবি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ, শূণ্য ঘোষিত ছাত্রলীগের কমিটির ১৯টি পদ ও পদধারীদের নাম প্রকাশ, কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে পদবঞ্চিতদের যোগ্যতার ভিত্তিতে পদায়ন এবং মধুর ক্যানটিন ও টিএসসিতে পদবঞ্চিতদের উপর হামলার সুষ্ঠু বিচার।
কর্মসূচির বিষয়ে ছাত্রলীগের বিগত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, আমরা একটি নায্য আন্দোলন করছি। কিন্তু আল্টিমেটাম দেয়ার পরও আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করার প্রয়োজন বোধ করেনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে অনশন কর্মসূচি শুরু করেছি।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ও পদবঞ্চিত অংশের মুখপাত্র রাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও যেন ছাত্রলীগ কলঙ্কমুক্ত হয়। আমাদের দাবি মানা না পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাবো।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ। তবে ঘোষিত কমিটিতে ‘বিতর্কিত’রা স্থান পেয়েছেন বলে অভিযোগ করে ওই দিন সন্ধ্যায় মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কর্মীদের মারধরের শিকার হন নারীনেত্রীসহ পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা।
পরে ১৮ মে রাতে টিএসসিতে আবার হামলার শিকার হন তারা। ওই ঘটনার পর রাতেই রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হামলার বিচারসহ কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে অবস্থান শুরু করেন তারা। তবে পরদিন ১৯ মে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন পদবঞ্চিতরা। এরপর ২০ মে মধুর ক্যান্টিনের ঘটনায় পাঁচজনকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ। ওই দিন রাতে জারিন দিয়া নামে এক বহিষ্কৃত নেত্রী ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। এরপর, ২৬ মে রাতে নবগঠিত কমিটির সবাইকে নিয়ে পরদিন ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এর প্রতিবাদে ২৬ মে মধ্যরাত রাত থেকে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন পদবঞ্চিতরা।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক