জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কেবল গান, কবিতা, সাহিত্য আর নাটকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নন। তাঁর ছিল আধুনিক ও মুক্তচিন্তার আদর্শ এবং দর্শন। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমানে প্রতিটি মানুষকে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে হবে- গড়ে তুলতে হবে ঐক্য ও সাম্যের এক কাঙ্খিত সমাজ।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার, জুন ২৭, ২০১৯ তারিখে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-তে জাতীয় পর্যায়ের নজরুল জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজক আইইউবি’র ডিপার্টমেন্ট অব ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাংঙ্গুয়েজেস এবং কাজী নজরুল ইসলাম-আব্বাসউদ্দিন আহমেদ রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি সেন্টার।
নজরুল জয়ন্তীর এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবির নাতনী, খিলখিল কাজী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইইউবি’র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মিলান পাগন।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে নজরুলকে নিয়ে আইইউবি’র ডিপার্টমেন্ট অব ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাংঙ্গুয়েজেস এর উপদেষ্টা অধ্যাপক নিয়াজ জামানের লেখা ‘কাজী নজরুল ইসলাম: পোয়েট্রি, পলিটিক্স, প্যাশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আসাদুজ্জামান নূর, এমপিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় বলেন, বিশ্বজুড়ে বর্তমানে যে উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে পড়েছে তাতে নজরুলের সাহিত্য চর্চা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশি করে নজরুলকে পৌঁছানোর কথা বলেন কবির নাতনি খিলখিল কাজী। দেশপ্রেম, মানবিকতা এবং অসাম্প্রদায়িক জীবন ও রাষ্ট্র গঠনে নজরুলের বাণী সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার পরামর্শ দেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। জাতীয় পর্যায়ের এ আয়োজনে নজরুলের জীবন ও রচনা নিয়ে আরও আলোচনা করেন অধ্যাপক মোহিতুল ইসলাম ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নজরুল গবেষক দেবযানী সেনগুপ্তা। এছাড়াও সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তৃতা করেন আইইউবি’র ডিপার্টমেন্ট অব ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাংঙ্গুয়েজেস এর প্রধান তৌহিদ বিন মুজাফফর।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল নজরুল পদকপ্রাপ্ত শিল্পী সাদিয়া আফরিন মল্লিকের পরিচালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন। এতে সাদিয়া আফরিন মল্লিক ও ইয়াসমিন মুস্তারীসহ প্রখ্যাত শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। নজরুল সংগীতের সঙ্গে পরিবেশিত হয় আকর্ষণীয় নৃত্যানুষ্ঠান। নজরুলের কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন আইইউবি’র বাংলা ল্যাংঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউটের বিদেশী শিক্ষার্থীরা।
আইইউবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ফ্যাকাল্টি ও প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তা, বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন পর্যায়ের আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ জাতীয় পর্যায়ের এই নজরুল জয়ন্তী উপভোগ করেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার