বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের শিক্ষকেরা। আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শিক্ষকেরা জমায়েত হন। পরে মানববন্ধনে সাদা দলের আহ্বায়ক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, ক্যাসিনো সম্রাট নাকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মাসে কোটি টাকা দেন। বিদেশে থাকা তারেক রহমানকে অত্যাচারী আওয়ামী লীগ নেতা যদি মাস কোটি টাকা দেন, তাহলে তারেক রহমান এ দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তাই আওয়ামী নেতাদের বলবো, অনতিবিলম্বে তারেক রহমানকে নেতা মেনে তার হাতে ফুল দিয়ে তার দলে যোগদান করে তারেক রহমান তথা খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করুন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনুন, দুর্নীতি নির্মূলের ব্যবস্থা করুন। বেগম জিয়াকে মুক্তি দিন।
সকাল সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তা দুপুর ১২ টায় শুরু হয়ে আধাঘণ্টা ধরে চলে। ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. লুৎফর রহমান, সাদা দলের শিক্ষক নেতা অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, ড. আব্দুল করিম ও ড. মোঃ মহিউদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, আতাউর রহমান বিশ্বাস, ইসরাফিল প্রামানিক রতন, মো. আল আমিন, মো. নূরুল আমিন, মুহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, বর্তমানে যেখানে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, শেয়ারবাজারে কোটি কোটি টাকা লুট, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় দেউলিয়াত্ব; সেখানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই কথিত দুই কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে বন্দী রাখা হয়েছে। অথচ ওই মামলার সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায় এই মুহূর্তে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজকে অনেকেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মানতে চান না। বলেন যে তিনি নাকি 'বাইচান্স' মুক্তিযোদ্ধা। আমি বলবো- আপনারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র দেখুন। সেখানে লেখা আছে জেড ফোর্সের ভূমিকা কি ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই শহীদ জিয়াকে বীর উত্তম খেতাব দিয়েছিলেন। বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জাতির কাছে স্বস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়া যায় না।
সভাপতির বক্তব্যে ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, দেশে আজ ভয়বাহ দুঃশাসন চলছে। গণতন্ত্র ধ্বংস। বাক স্বাধীনতা তো স্বপ্নের কথা। বালিশের দাম আকাশচুম্বী। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার প্রাণান্তকর চেষ্টা। মধ্যরাতের ভোট চুরির প্রহসনের নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করেও শান্তি পাচ্ছে না শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশটাকে বিভিন্ন চুক্তির বেড়াজালে আটকিয়ে ভারতের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা। ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট, বিদেশে পাচার তাতেও কি শেষ রক্ষা হবে?
দুর্নীতিবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের চুনোপুটিদের বাসায় আলমারী খুললে কোটি কোটি টাকা আর ভরি ভরি স্বর্ণ বের হচ্ছে। তাহলে আওয়ামী লীগের রাঘববোয়ালদের আলমারি খুললে যে কি বের হয়! অথচ সাধারণ জনগণের আলমারি খুললে বের হয় শুধুই তেলাপোকা। তিনি অবিলম্বে অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা