২৭ জানুয়ারি, ২০২০ ১৪:৩৩

সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে আমরণ অনশনে জাবি শিক্ষার্থী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে আমরণ অনশনে জাবি শিক্ষার্থী

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে একাই আমরণ অনশনে বসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থী।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের ওই শিক্ষার্থীর নাম আদিব আরিফ। গেল শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরের দিক থেকে চার দফা দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন চালিয়ে আসছেন তিনি।

আরিফের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রবিবার অনশনে যোগ দেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) বিবিএ-এর শিক্ষার্থী নাজমুল করিম।

তাদের দাবিগুলো হল-

১.ভারত-বাংলাদেশ  সীমান্তে সকল হত্যার আন্তর্জাতিক আইনে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
২.ভারতকে সীমান্ত হত্যার জন্য ক্ষমা চেয়ে আর হত্যা না করার প্রতিশ্রুতি দিতে  হবে।
৩.সীমান্তে হত্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারকে তদন্ত সাপেক্ষে দুই দেশের যৌথভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। 
৪.বাংলাদেশের সংসদে সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদ করে নিন্দা জানাতে হবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফ বলেন, “প্রতিনিয়ত সীমান্তে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র ভারত। কিন্তু এই মানুষ হত্যার অনুভূতিটা এখন আর আমাদের মাঝে নেই। আমরা প্রতিদিন ধর্ষণ করে হত্যা, নির্যাতনে হত্যা, ক্রসফায়ারে হত্যা, বোমা মেরে হত্যা শুনতে শুনতে একেবারে অনুভূতিহীন হয়ে গেছি। এই অনুভূতিটা আবার জেগে ওঠে যখন নিজের, বাবা, ভাই কিংবা বোন হত্যার শিকার হয়।”

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার কিছু পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন আরিফ। তিনি বলেন, “গত দশ বছরে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সালে সীমান্তে ভারত ৩০০ মানুষ হত্যা করেছে। ২০১৯ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৪৬। আর ২০২০ সালে মাত্র ২৩ দিনেই হত্যা করেছে ১৫ জন। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সীমান্তে হত্যা তিনগুণ। আর এভাবে চলতে থাকলে ২০২০ সালে সংখ্যাটা ৪০০ও ছাড়াতে পারে। কিছুদিন আগে নিউজে দেখলাম ১১ বছর আগে বাবাকে মেরেছে বিএসএফ এবার মারলো ছেলেকে।”

সবাইকে এই নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে রাস্তায় এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “একবার চিন্তা করেছেন এই আমরাই ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, ৪ জনের হত্যার প্রতিবাদে পুরো দেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে মায়ের ভাষার জন্য লড়াই করেছি। আর সেই আমরাই ২০২০ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এসেও কি রকম চেতনাহীন হয়ে গেছি।”

তিনি আরও বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধু ১৬ ডিসেম্বর আর ২৬ মার্চের জন্য রেখে না দিয়ে আসুন হৃদয়ে অনুভব করি। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। এভাবে চলতে পারে না। পাশের দেশ নেপাল দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে ১ জন মানুষকে মারলেও তার প্রতিবাদ করতে হয়। এবার জেগে ওঠুন, প্রতিবাদ করুন। কত সময় নানা কাজে ব্যয় করেন। দশটা মিনিট দেশের জন্য প্রতিবাদ করুন। রাস্তায় নেমে আসুন। আর শিক্ষার্থী ভাইদের বলি কত সময় আড্ডায়, ফোনে গেম খেলে নষ্ট করেন। এবার একটু বাস্তব জীবনে খেলুন। ভাইয়ের জন্য দাড়াঁন, দেশের জন্য দাড়াঁন।  আর কোনও হত্যা নয়, এবার হবে প্রতিবাদ।”

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর