শুধু বাংলাদেশ নয়, আয়তনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার অর্ধশত বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমি দস্যুদের কবল থেকে এ ক্যাম্পাসকে রক্ষার জন্য বিশেষ প্রকল্প হাতে নেন।
সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর হাত ধরে স্বপ্নের এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়।
সীমানা চিহ্নিত করণের দায়িত্ব অর্পিত হয় চবির পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রবীণ শিক্ষক প্রফেসর ড. অরুন কুমার দেবের উপর। সফলভাবে সে দায়িত্ব পালন করায় ৬৫ ভাগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছিল। ২০১৯ সালের জুন মাসে প্রফেসর ড. অরুণ কুমার দেব শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসরে যান। এরপর থেকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজও বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৯ সালের জুন মাসে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার দায়িত্ব নেওয়ার পর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হন।
জানা যায়, সীমানা প্রাচীরের কাজ করতে গিয়ে গহীন জঙ্গলে কাঁটা বিঁধে আহত হন প্রফেসর অরুন কুমার দেব। পরে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে পায়ের তিনটি আঙ্গুল হারান তিনি। বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রবীণ এই শিক্ষক। চিকিৎসা করতে গিয়ে সব মিলিয়ে ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতিও ছিলেন দীর্ঘ চার বছর।
তিনি বলেন, আমি এ ক্যাম্পাসে দীর্ঘ ৬০ বছর বসবাস করছি। তাই ক্যাম্পাসের ভূমি কিভাবে দখল করে নেয় ভূমি দস্যুরা সেটা দেখার সুযোগ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অনেক উপাচার্য চেয়েছিলেন এসব ভূমি পুনরুদ্ধার করতে। কিন্তু সবাই ব্যর্থ হয়েছেন। তবে সাবেক উপাচার্যের অক্লান্ত পরিশ্রম, শক্তাবস্থান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজরদারীর কারণে এ ২১০০ একর ভূমি আমরা ফিরে পেয়েছি।
তিনি বলেন, এ কাজ করতে গিয়ে কত পাহাড় পর্বত আর জঙ্গল পাড়ি দিয়েছি তার হিসাবে নেই। কিন্তু হঠাৎ পায়ে কাঁটা বিঁধলে দীর্ঘদিন বিছানায় পড়ে থাকার পর শেষ পর্যন্ত তিনটি আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়েছে। অথচ বর্তমানে আমার পেনশন বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যায়ের জায়গা দখলকারী সাবেক এক স্টেট কর্মকর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রবীণ এ শিক্ষকের দীর্ঘ এক বছর পেনশন বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ বলেন, পেনশন সহজীকরণ নীতিমালা অনুযায়ী ২০% স্থগিত রাখা হয়েছে। বাকিগুলো দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন