চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত (চসিক) ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এন্ড ম্যাটস কোর্স শেষে শিক্ষার্থীরা সনদ অর্জন করতে পারলেও চিকিৎসা পেশা শুরু করার অনুমোদন ছিল না। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’র (বিএমডিসি) স্বীকৃতি না থাকায় সনদ এবং দক্ষতা অর্জন করার পরও ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা-দুশ্চিন্তায় ছিলেন শিক্ষার্থীরা। অবশেষে ম্যাটস্ কোর্স চালুর চার পর অনুমোদন পেল বিএমডিসির।
গত রবিবার ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এন্ড ম্যাটস’র অধ্যক্ষের কাছে স্বীকৃতিপত্র দিয়েছেন বিএমডিসির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত)। এর মাধ্যমে শঙ্কা কাটছে কোর্স সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের। ২০১৬-১৭ থেকে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৫০জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলায় এটিই একমাত্র সরকারি ম্যাটস কোর্স।
জানা যায়, ম্যাটস কোর্স শেষে একজন শিক্ষার্থী নয় মাস চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ এবং আরো তিন মাসের ইন্টার্নশিপ করতে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করতে হয়। কিন্তু সনদ অর্জন ও কাজে দক্ষতা তৈরি হলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় থাকতেন শিক্ষার্থীরা। বিএমডিসির অনুমোদন না থাকায় শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা পেশা করতে পারতেন না। তাছাড়া বিএমডিসির অনুমোদন থাকলে ম্যাটস কোর্স সম্পন্নকারীরা সরকারিভাবে স্যাকমো (সাব অ্যাসিসটেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার) পদে চাকরির সুযোগ পাওয়া, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় প্রাইভেট চেম্বারে ব্যবস্থাপত্র দিতে পারা (নামের আগে ডা. না লিখে) এবং পরবর্তীতে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন করে মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট নিয়োগের সুযোগ পাবে।
চসিক ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এন্ড ম্যাটস’র অধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ম্যাসট কোর্স বিএমডিসি’র অনুমোদন পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা ছিল তা কাটছে। এর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষরাই বেশি স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। তাছাড়া বর্তমানে দেশের ১৩ হাজার ৮৬১টি কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন করে মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত আছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ম্যাটস কোর্স সম্পন্নকারীরা সেখানে শূন্য পদে চাকরির সুযোগ পাবে। সব মিলে ম্যাটস কোর্স সম্পন্নকারীরা স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ অবদান রাখতে পারবে।
চসিক সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে নগরের ফিরিঙ্গি বাজার এলাকায় চসিকের নিজস্ব শূন্য দশমিক ৬৭৮৪ একর ভূমিতে সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ‘ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এন্ড ম্যাটস’ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ম্যাটস কোর্স চালু করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করা হয়। ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ম্যাটস কোর্স চালুর অনুমোদন মিলে। তাছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে চার বছর মেয়াদী ‘বিএসসি ইন হেলথ টেকনোলজি’র অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চসিকের ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এন্ড ম্যাটস প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য সহকারি তৈরি ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা খাতে দক্ষ জনবল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানা যায়।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা