শিক্ষার্থীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) মেডিকেল সেন্টারের এক উপ-প্রধান টেকনিক্যাল অফিসারকে সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারী) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এ বিষয়ে মেডিকেল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসকের কক্ষে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো সুলতান উল ইসলাম, ছাত্র উপদেষ্টা মোঃ তারেক নূর, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক ও প্রধান চিকিৎসক ডা. তবিবুর রহমান শেখ।
সভা শেষে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, ছেলেমেয়েরা যেটা বলেছিলো, অভিযুক্ত সেটা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন- ওনার ভুল হয়ে গেছে। বিষয়টা বুঝতে পারেননি। নিজের সন্তানের মত মনে করেই কিছু কথা বলেছিলেন। তিনি একজন বয়স্ক মানুষ। ঘটনার প্রেক্ষীতে তাকে সতর্ক করা হয়েছে। আর এঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না হয় সে ব্যাবস্থায় আমরা নিলাম। আমরা চাই ছাত্রছাত্রীদের সাথে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটা পারিবারিক সূত্রের মত সম্পর্ক হোক।
শিক্ষার্থীরা মাঝেমধ্যেই চিকিৎসক ও অন্যান্য দায়িত্বরতদের খারাপ আচরণের বিষয়ে অভিযোগ করেন- এবিষয়ে জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য আরও বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। আমি চিকিৎসকদের সাথে বসার ব্যবস্থা করছি।
চিকিৎসক টেকনিক্যাল অফিসারকে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন- বিষয়টা কতটুকু যৌক্তিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, সার্বিক অবস্থা নিয়ে আমাদের পর্যালোচনা হয়েছে। এ ধরণের ঘটনার যেনো পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যবস্থায় আমরা নিচ্ছি।
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী মোছা. নাসরিন আক্তার।
তার লিখিত অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) গলায় মাছের কাটা ফোটার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যান তিনি। সেসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক উপ-প্রধান টেকনিক্যাল অফিসার মো. মাহবুব আলমকে চিকিৎসা দিতে বলেন। মাহবুব চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়ে ভুক্তভোগী ও তার সঙ্গীদের সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করেন। এ সময় তিনি থাপ্পড় দিতে উদ্যত হন এবং ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অসহায় হয়ে মেডিকেল সেন্টার থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপ-প্রধান টেকনিক্যাল অফিসার মো. মাহবুব আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গলায় কাটা ফোটার সমস্যা নিয়ে এক শিক্ষার্থী এসেছিলেন। কর্তব্যরত নার্স না থাকায় চিকিৎসক স্যার আমাকে দেখতে বলেন। তখন আমি ওই শিক্ষার্থীর সাথে আসা মেয়েটিকে বলেছিলাম কাটা আছে কিনা দেখতে। তারা কাটা খুঁজে পেলে, আমি তাদের আবার চিকিৎসক স্যারের কাছে যেতে বলি। আমি 'মা' সম্বোধন করেই তাদের সাথে কথা বলেছিলাম। এরপরে তারা আমাকে বলে আপনি তো কিছুই করলেন না। এরই প্রেক্ষিতে আমি তাদের শুধু বলেছিলাম থাপ্পড় খাবা। আমি আসলে রাগের কারণে একথা বলিনি। মুখ ফসকে কথাটি বলে ফেলেছিলাম। তারা আমার সন্তানের বয়সী। এ ঘটনায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত