চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়টি রয়েছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। নানান অসঙ্গতির মধ্যেও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ইতোমধ্যে ৫ জনের বিষয়ে সুপারিশ করেছে সিলেকশন বোর্ড। সিলেকশন বোর্ডে (ভাইভা বোর্ড) বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ শিক্ষক না রাখা, আবেদনের সময় স্বল্পতা, কয়েকজন আবেদনকারীকে পরীক্ষার জন্য না ডাকা, প্রবেশপত্র ছাড়াই পরীক্ষায় অংশ নেওয়াসহ উচ্চ আদালতের রুল নিষ্পত্তি না করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এ নিয়োগ প্রক্রিয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৬ মে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ২৬ মে পর্যন্ত ১০ দিন আবেদনের সময় দেওয়া হয়। তবে এই দশ দিনের মধ্যে ৯ দিনই ছিলো সরকারি ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি। ফলে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য সর্বসাকুল্যে একদিন সময় পান আগ্রহীপ্রার্থীরা। এছাড়াও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সচল ছিলো না বলে অভিযোগ করেন একজন প্রার্থী। আবেদনের সময় স্বল্পতার কারণে কয়েকজন দরখাস্ত জমা দিতে পারেননি। পরে একজন প্রার্থী আবেদন করতে না পেরে উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত এ বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- মর্মে রুল জারি করেন। আদালতের রুলের নিষ্পত্তি না করেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। গত বছরের ১৪ নভেম্বর এ নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা শেষে তিন জনের স্থলে পাঁচজনকে সুপারিশ করেছে সিলেকশন বোর্ড।
এছাড়া ফারসি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখা হয়েছে চবির বাংলা বিভাগ ও ঢাবির আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের দুই শিক্ষককে। যার ফলে বিষয়টিকে ‘হাস্যকর’ বলেও মন্তব্য করেছেন বিভাগের একজন অধ্যাপক।
জানা গেছে, মৌখিক পরীক্ষার মাত্র ১০ দিন আগে তারিখ ঘোষণা করা হয়। তাই সময় স্বল্পতার কারণে কয়েকজন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। কয়েকজন প্রার্থী ভাইভা কার্ডও পাননি। গত ২৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর এ নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি দেন শিক্ষক পদে আবেদনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার। তিনি জানান, আবেদনের সকল প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সত্ত্বেও ভাইভা কার্ড পাননি তিনি। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ভাইভা কার্ড ডাকযোগে নাজমুন নাহারের ঠিকানায় পাঠানো হলেও কার্ডটি ফেরত এসেছে। তাই এতে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
এদিকে কর্তৃপক্ষের এমন জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি আবেদনকারী নাজমুন নাহার। তিনি ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতে রিটের আবেদন করেছেন। এছাড়া গত ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নাজমুন নাহার এ বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষা পুনরায় গ্রহণের বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এস. এম. মনিরুল হাসান বলেন, ‘ভাইভা কার্ড ডাকযোগে নাজমুন নাহারের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছিল। তবে কার্ডটি ফেরত এসেছে। আমি বিষয়টি যাচাই করে দেখেছি। এতে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।’
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা