ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ, মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী। 'শতবর্ষের মিলনমেলা'-শিরোনামে এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ২৫টি দেশ থেকে যুক্ত হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে আমাদের সংগঠনের জীবন সদস্যরা পরিবারসহ উপস্থিত থাকবেন। আমরা প্রত্যাশা করছি বিশ্বের ২৫টি দেশের অ্যালামনাই আমাদের অনুষ্ঠানে যুক্ত হবেন। অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে আমাদের অনেকগুলো প্রকাশনার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করি আগামী ১২ মার্চ আনন্দ উল্লাসে, শপথে অঙ্গীকারে আমরা আমাদের মিলনমেলা সম্পন্ন করতে পারব।
সংগঠনের সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, শতবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে পৌঁছানোর কথা ছিল সেখানে আসতে পারেনি। আমরা দেখেছি বিশ্বের ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র ১০০ র্যাংকিংয়ের ভেতরে আনতে আমাদের সংগঠন কাজ করছে। আমরা জানি এই অঞ্চলে শুধু কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো, যেখানে ধনী ও উচ্চশ্রেণির লোকেরা পড়াশোনা করতে পারতো। গরিবরা এই সুযোগ পেতো না। সকল শ্রেণির উচ্চশিক্ষা নিশ্চত করার লক্ষ্যে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মতো মানুষের প্রচেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ৩০/৪০ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সুযোগসুবিধাগুলো ছিল সেগুলো দিন দিন কমে আসছে। আপনারা দেখবেন ৬০ এর দশকের পাঠাগার, মেডিকেল সেন্টার, কিন্তু এখনো আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাড়লেও সেগুলোর ধারণক্ষমতার ও সক্ষমতা বাড়েনি। তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০-৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী অর্থাভাবে যথাযথভাবে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে না। ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন তাদের জন্য কাজ করবে।
তিনি বলেন, আমরা বছরে সাড়ে তিন কোটি থেকে চার কোটি টাকা বৃত্তি প্রদান করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চের জন্য যে বাজেট প্রয়োজন সে পরিমাণ বাজেট সরকার থেকে আসছে না। আমরা সেখানে অনুদান দিতে চাই। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৯৩৩৭ জন সদস্য এবং তাদের স্ত্রীসহ ১১,৩২৭ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। সকলের প্রতি অনুরোধ যারা যারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি তারা সকলেই রেজিস্ট্রেশন করবেন।
একে আজাদ জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ র্যাংকিংয়ে আনতে আমরা ১০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি। ইতোমধ্যে অ্যালামনাই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা অনেকদূর এগিয়ে এসেছি। আশা করছি, আগামী ১/২ বছরের মধ্যে আমরা বাকি অর্থ জোগাড় করে ফেলব।
এসময় মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার অনুষ্ঠানসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আগামী ১২ মার্চ কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ৮:৩০ টা থেকে অ্যালামনাই ও অতিথিগণ প্রবেশ করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সকাল ১০:৪৫ মিনিটে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ ও শোক প্রস্তাবের মাধ্যমে শুরু হবে। ১০টা ৫০ মিনিটে প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের মোড়ক উন্মোচন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ শিল্পীর ১০০ ছবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রপ্রদর্শনী উদ্বোধন হবে। এরপর সম্মানিত অতিথিগণ বক্তব্য রাখবেন।
তিনি জানান, দুপুর ১২ টা ২০ মিনিটে ‘বাংলাদেশের পদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই’-শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান পালিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এরপর বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ জন গুণীজনকে মরনোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হবে। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন সংগীত পরিবেশন করবেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ