ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক তরুণীকে ইভটিজিং ও মারধর করার অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)- রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নাজমুল ওরফে জিম সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম সোহানের অনুসারি বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
ঘটনার সময় তাৎক্ষণিকভাবে জিমের বিরুদ্ধে আরেক ভুক্তভোগী টাকা ছিনতাই করার অভিযোগ আনেন। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জিম।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অন্তত দুই জন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুই জন বন্ধুর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে ছবি তুলছিলেন ওই তরুণী। হঠাৎ নাজমুল এবং তার এক বন্ধু ওই তরুণী এবং তার বন্ধুদের এতো রাতে ক্যাম্পাসে আসার কারণ জানতে চায়। তারা ছবি তুলছেন জানালে তাদের আরও নানা প্রশ্ন করতে থাকেন তারা। এক পর্যায়ে জিম অশালীন সম্বোধন ও গালিগালাজ করলে ওই তরুণী জিমকে প্রথমে একটি থাপ্পর মারেন। ক্ষিপ্ত হয়ে জিমও তরুণীকে পরপর তিনটি থাপ্পর মারেন।
তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি রাতের খাবার খেয়ে মোটরসাইকেলে ফেরার পথে দেখতে পাই ওই তরুণ-তরুণীরা রাজু ভাষ্কর্যে ঘুমিয়ে থাকা ভাসমান মানুষের ছবি তুলছে। আমি গিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করি, ‘ছবি তোলার আগে অনুমতি নিয়েছে কিনা?’ এটা জিজ্ঞেস করলে ওই তরুণী ক্যাম্পাস কিনে নেওয়ার কথা বলে। আমি ভিডিও করতে গেলে ‘দুই টাকার মোবাইল, ভাঙ্গা মোটরসাইকেল ব্যবহার করি’ ইত্যাদি বলে উস্কানি দেয়। এমনকি আমার গায়ে হাত দেয়। তখন অন্যরা গিয়ে আমাকে থামিয়েছে।
এদিকে, ঘটনার সময় সেখানে আবুল বাসার নামে একজন এসে জিমের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনেন। বাসার জানান, তিনি ক্যাম্পাসের হাকিম চত্বরের একটি দোকানের কর্মচারী। তার দাবি, সোমবার রাত ১০টার দিকে তিনি বেতন তুলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় নাজমুল তাকে একা পেয়ে মারধর করে ফোন, ম্যানিব্যাগ এবং হেডফোন নিয়ে নেয়। পরে ফোন ফিরিয়ে দিলেও সব টাকা নাজমুল নিয়ে যায়। তবে, এ অভিযোগকে নিজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেন জিম।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘একজন তরুণী আমাদের সাথে মৌখিকভাবে কথা বলেছেন। তাকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অভিযোগ করতে পরামর্শ দিয়েছি। এক্ষেত্রে তাকে প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগিতা করা হবে।’
এদিকে, বক্তব্য জানতে সুর্যসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম সোহানের একাধিক নম্বরে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল