রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির অন্যতম সহযোগী ছিলেন শহীদ জাতীয় চার নেতা। তারা ছিলেন রাজনীতিতে মেধা ও আস্থার প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে তারা ছিলেন নিরলস। কোনো প্রলোভন দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির কল্যাণের আদর্শচ্যুত করা যাবে না জেনেই সেদিন তাদের হত্যা করে এবং জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার হীন প্রয়াস চালান দেশদ্রোহীরা। কিন্তু বাঙালি জাতির প্রতি তাদের অবিনাশী চেতনা আজও অবিনশ্বর হয়ে আছে। তাই আজ আমরা শ্রদ্ধার সাথে এই শহীদদের স্মরণ করছি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সিনেট ভবনে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন উপাচার্য।
সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ. এইচ. এম. খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সবচেয়ে বেশি রক্ত বিসর্জন দিয়ে স্বাধীন হওয়া বিশ্বের একমাত্র দেশ বাংলাদেশ। এ দেশে পাক হানাদারদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ শাহাদাত বরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অথচ স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যেই দেশদ্রোহীরা চক্রান্তের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। সেদিন তারা নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নাম। কত বড় বিশ্বাসঘাতক হলে এই কাজটা তারা করতে পারে, যখন বঙ্গবন্ধু তাদের মুক্ত আকাশের নিচে স্বাধীনভাবে বিচরণের পথ করে দিয়েছিলেন। তাই এসব ঘাতকদের দেশে ফিরে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি আজ জোরদার হচ্ছে। আমরাও এই দাবি জানাই।
জেলহত্যার প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, দেশদ্রোহীরা বুঝতে পেরেছিলেন বঙ্গবন্ধুর পর এই চার নেতা দেশের হাল ধরবেন। তাই পরিকল্পিতভাবে চক্রান্তের নীল নকশা তৈরি করে জেলখানায় তাদেরকেও নৃশংসভাবে হত্যা করে দেশবিরোধী অপশক্তিরা। তবে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন, তাই দেশের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা ও বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার দীপ্ত প্রতিজ্ঞার ফলেই দেশ আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে পেরেছে। শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর কাঙ্ক্ষিত সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠছে।
মুখ্য আলোচক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, জেল হত্যাকাণ্ডে শহীদ জাতীয় চার নেতা ছিলেন সফল রাজনীতিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম কান্ডারী। শিক্ষা জীবনেও তারা ছিলেন কৃতী। তারা দেশকে ভালোবেসে, জাতির কল্যাণে রাজনীতির মাধ্যমে জনসেবায় নিজেদের নিবেদিত করেছিলেন। সেটাই কাল হয়েছিল। দেশপ্রেমের কারণেই তাদের জীবন দিতে হয়। তাদের আদর্শ হয়ে আছে অবিনশ্বর। সেই আদর্শ চর্চার মাধ্যমেই শহীদদের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান দেখানো হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ. এইচ. এম. খায়রুজ্জামান লিটন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক (অব.) অবায়দুর রহমান প্রামানিক। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই