রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। তাদের নিয়োগ বাতিলে সাত দিনের আলটিমেটামও দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যোসাল মিডিয়ার একাধিক গ্রুপে এমন প্রক্রিয়া দেখা গেছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, বিষয়টি আমি অবগত। সার্বিক বিষয় নিয়ে ছুটির মধ্যেই আমরা বসব।
জানা গেছে, গত ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম. সাইদুল ইসলাম, মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তামজীদ হোসেন মোল্লা, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজিয়া আফরিন-কে এক বছরের জন্য সহকারী প্রক্টর পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এদের মধ্যে ড. তামজিদ হোসেন মোল্লা ও নাজিয়া আফরিন আওয়ামী প্যানেলের শিক্ষক। ড. তামজিদ হোসেনের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, আপনাদের (প্রশাসন) উপর আমাদের একবুক আশা ভরসা ছিল। কিন্তু বারবার আপনারা সেই আশাকে নিরাশায় রূপ দিচ্ছেন। ফ্যাসিস্টদের বিচারের জন্য আর কোনো ছাড় হবে না। আর আপনাদেরকে কালক্ষেপণ করতে দেওয়া হবে না। রুটিন দায়িত্ব পালন করার জন্য আপনাদেরকে ওই চেয়ারে বসানো হয়নি। জুলাইকে ধারণ করতে না পারলে জায়গা ছেড়ে দিন। আগামী সাত দিনের মধ্যে বিগত স্বৈরাচার রেজিমের মদদপুষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের বিচার নিশ্চিতে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নিলে আপনাদের পদত্যাগের দাবি তুলতে আমরা দুইবার ভাববো না।
আরেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আওয়ামী শাসনামলে আট বছর ধরে তাপসী রাবেয়া হলে হাউজ টিউটর ছিল তামজীদ হোসেন মোল্লা। তাকে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আন্দোলনের বিরুদ্ধে মাঠে সোচ্চার ছিলেন। কীসের ভিত্তিতে তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। শহীদের এক ফোটা রক্তের সাথে বেইমানি নয়। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদত্যাগ করবেন। সাত দিন পরে ভুলে যাবো আপনাদের সাথে আন্দোলন করেছি।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, ড. মোল্লা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন জানলে তাকে এ পদে আনা হতো না। প্রক্টরিয়াল বডিতে লোকবল বাড়ানো প্রয়োজন। ছাত্রীদের সমস্যা দেখতে একজন নারী সহকারী প্রক্টরও জরুরি ছিল। অনেকদিন থেকেই বিভিন্ন শিক্ষককে এ পদের জন্য আহ্বান করা হলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়। আমি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে স্বাক্ষর করেছি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন