রাজধানীতে বেপরোয়া বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সিলেটে অঘোষিত ধর্মঘট পালন করেছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।
শুক্রবার দিনভর সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। সিএনজি অটোরিকশা চলাচলেও বাধার সৃষ্টি করে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সিলেট জেলার কোনো সড়কেই বাস চলাচল করেনি। সিলেট থেকে ঢাকা কিংবা সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারগামী বাসও বন্ধ ছিল।
শুক্রবার সকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর ওরস শেষ হয়। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ বাস চলাচল বন্ধ থাকায় পড়েন বিপাকে। সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে শত শত মানুষকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
বাসের অপেক্ষায় থাকা বয়োবৃদ্ধ কবির আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকদের নৈরাজ্য কবে বন্ধ হবে! তারা তো দেশটাকে মগের মুল্লুক বানিয়ে রেখেছে। এদেরকে প্রতিহত করার যেন কেউ নেই!’
হযরত শাহজালাল (রহ.) এর ওরসে আকলিমা খাতুন এসেছিলেন কুমিল্লা থেকে। শুক্রবার সকালে বাস না পেয়ে টার্মিনালে বসে থাকতে দেখা যায় তাকে। তিনি বলেন, ‘এসব কী হচ্ছে দেশে। আইন না মেনে তারা গাড়ি চালায়, প্রতিবাদ করলে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এভাবে তো চলতে পারে না।’
এদিকে, অঘোষিত ধর্মঘটের সাথে বিভিন্ন স্থানে পিকেটিংও করে পরিবহন শ্রমিকরা। তারা হাতে লাঠি নিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বাস আটকে রাখে পরিবহন শ্রমিকরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনাস্থলে জালালাবাদ থানা পুলিশ থাকলেও তারা ছিল নীরব। নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় এক মাইক্রোবাস চালক যাত্রী নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা।
এসময় এক যাত্রীকে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক, সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়ক, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে পিকেটিং করে বাস চালকরা।
সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক বলেন, ‘আমরা ধর্মঘটের ডাক দেইনি। নিরাপত্তার অভাবে চালকরা বাস চলাচল বন্ধ রাখেন।’
সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, শুক্রবার সিলেটে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে ছিল না। তবু বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক ছিল।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান