নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে সব জল্পনা থেমে গেছে রবিবার, গঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আগামী মেয়াদের নতুন মন্ত্রিসভা। এ মন্ত্রিসভার একেবারে নতুন মুখ ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সিলেট-১ আসনের এই সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
মন্ত্রিসভায় ড. মোমেন নতুন মুখ হলেও ‘সিলেটি’ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের তালিকায় তার অবস্থান তৃতীয়। তার আগে বৃহত্তর সিলেটের আব্দুস সামাদ আজাদ এবং হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের গেল দুই মেয়াদে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আবুল মাল আব্দুল মুহিতের ছোট ভাই ড. মোমেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মুহিত প্রার্থী হননি, তার স্থলে মোমেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভাইয়ের পক্ষে মুহিত ভোটের মাঠে যেমন ছিলেন, তেমনি ভোট শেষে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়ে দেন, মোমেন এবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থান পাচ্ছেন।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। তার দায়িত্ব পালনকালেই বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সংখ্যক জাতিসংঘের অধীনে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের মর্যাদা লাভ করে। এ সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ মহিলা শান্তিরক্ষী বাহিনী এবং নেভাল ফোর্স পাঠানো শুরু করে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিবদমান সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ড. মোমেন। বাংলাদেশ বিরোধপূর্ণ ওই সমুদ্রসীমা বিজয় করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত থাকার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ ড. মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ায় শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ড. মোমেন। দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সর্বোচ্চ পরিশ্রম করে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন আব্দুস সামাদ আজাদ। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ভুরাখালী গ্রামে জন্ম নেয়া এই প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ১৯৭৩ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রথম দফায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে ফের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন আব্দুস সামাদ আজাদ। এ দফায় ১৯৯৬ সালের মার্চ থেকে ২০০১ সালের জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল না ফেরার দেশে চলে যান এই জাতীয় নেতা।
বাংলাদেশের খ্যাতনামা কূটনীতিবিদ হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী জাতীয় সংসদের প্রাক্তন স্পিকার হিসেবে সমধিক পরিচিত। তবে সিলেটের এই সন্তান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৮৪ সালের জুন থেকে ১৯৮৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা