সিলেটে প্রবাসী বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের (২০১৯ সালের) বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠান হয়ে গেল শনিবার। ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের খন্দকার বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের চেয়ারপার্সন রবিন পাল ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু। কিন্তু বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নেতৃবৃন্দকে দাওয়াত দেয়া হলেও বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার কোনো মুক্তিযোদ্ধা এই অনুষ্ঠানের দাওয়াত পাননি বলে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে দুই উপজেলার মুত্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ওসমানীনগর উপজেলা শাখার’ আহবায়ক জাহেদুল আম্বিয়া কার্জন বলেন, আমার কর্মরত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমি বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে যাই। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কাহিনী তুলে ধরেন এবং অনুষ্ঠানস্থলে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে থাকেন। কিন্তু সেখানে স্থানীয় কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে না পেয়ে তিনি ব্যথিত হন। কারণ আয়োজকরা দুই উপজেলার কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে দাওয়াত দেননি, এজন্য কোনো মুক্তিযোদ্ধা অনুষ্ঠানে যাননি।
‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ওসমানীনগর উপজেলা শাখার’ যুগ্ম আহবায়ক পরীক্ষিত দাস, তাজুল ইসলাম তালুকদার রাসেল, সদস্য সচিব সুমন আহমদ, সদস্য এনামূল গণী মো. হুমায়ুন কবীর ও তাজুল ইসলাম মুহিত বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এদেশে স্বাধীনতার সুফল অর্জিত হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় জাতীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতে এ ধরণের একটি অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের দাওয়াত না দেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবজ্ঞা ও অবহেলার শামিল। আমরা এ বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহলের নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রবাসী বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজকরা অতি উৎসাহী হয়ে তারা বিলাসী ও ব্যয়বহুল অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। কিন্তু প্রতিবারই তাদের কাছ থেকে একটা না একটা অবহেলার বিষয় প্রকাশ পায়। এবারো মুক্তিযোদ্ধারা তাদের কাছে অবহেলিত হয়েছেন। এজন্য তারা মুক্তিযোদ্ধাদের দাওয়াত দেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি।
যেখানে মুক্তিযোদ্ধাবান্ধব পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজেছেন। কিন্তু এরপরও আয়োজকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ধরণের নমনীয়তা প্রকাশ পায়নি।
ওসমানীনগর উপজেলার কয়েকজন সাংবাদিক জানান, বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজকরা মুক্তিযোদ্ধাদের দাওয়াত না দেয়ায় আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত হয়েছি। তারা বলেন, আয়োজকরা আমাদেরকেও দাওয়াত দেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব